অপরাধএক্সক্লুসিভঢাকাবাংলাদেশরাজধানী

তৃতীয় লিঙ্গ রূপান্তরের এক ভুয়া সার্জন মালিবাগের বিউটি পার্লার থেকে আটক

গতকাল (শুক্রবার) ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অভিযান চালিয়ে তিন সহযোগীসহ এক ভুয়া সার্জনকে গ্রেফতার করেছে। জব্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ অপারেশনের বিভিন্ন সরঞ্জাম এবং হরমোন পরিবর্তনের ওষুধ।তারা লেজার বিউটি পার্লারের আড়ালে পুরুষদের তৃতীয় লিঙ্গে রূপান্তর করছিল।এমনকি অবৈধভাবে ঠোঁট ফোলানো, শরীর ফর্সা করা এবং সিলিকন ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্টও করা হতো।

ভুয়া সার্জনের নাম হাদিউজ্জামান রহমান।হিজরাদের একটি চক্র ভিক্ষাবৃত্তি ও দল ভারী করতে অন্তত ১০০ জনকে তৃতীয় লিঙ্গে রূপান্তর করেছে জানিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, মূলত হাদিউজ্জামানের নেতৃত্বে একটি চক্র মানুষের লিঙ্গ পরিবর্তন করে থাকে, আর পরিবর্তিত লিঙ্গের এসব মানুষ বিভিন্ন জায়গায় হিজড়া সেজে চাঁদাবাজি ও ভিক্ষাবৃত্তি করে বেড়ায়।গত পাঁচ বছর ধরেই চক্রটি খুলনা ও ঢাকায় এই অপরাধ করে আসছিল।

শনিবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, চক্রের প্রধান হাদিউজ্জামান রহমান। তার স্ত্রী সোনিয়া আক্তারও তার সহযোগী। তাদের অপকর্ম নিশ্চিত হয়ে এই দম্পতির দুই সহযোগীসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।এই দম্পতির সহযোগী নুর ইসলাম ও জনি আহম্মদ।

হাদিউজ্জামান খুলনায় এক সার্জনের সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন একসময়। ঢাকায় এসে নিজেই বনে যান সার্জন। রাজধানীর মালীবাগের মাহি হাসান টাওয়ারের চতুর্থ তলায় স্ত্রীর নামে খুলে বসেন লেজার বিউটি পার্লার।একটি ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এসব করে আসছিলেন তিনি।

গ্রেফতার চক্রের প্রধান হাদিউজ্জামান গোয়েন্দা পুলিশকে জানিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় থাকা তৃতীয় লিঙ্গে গুরু মায়েদের সঙ্গে অনেক পুরুষের সখ্যতা রয়েছে। এই সখ্যতা গড়ে ওঠার পর ওই সব পুরুষদের নিজেদের দলে রাখতে অফার দেন গুরু মা। এজন্য তাদের সার্জারি বা অপারেশন করতে বলেন। এ পর্যায়ে তারা হাদিউজ্জামানের ঠিকানা দেয়। মালিবাগের এই পার্লারে আসার পর পুরুষদের শরীরে হরমোন প্রয়োগ করা হয়। এরপর তাকে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত করা হয় এবং এক পর্যায়ের অপারেশন করা হয়।

গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, ভুয়া সার্জন হাদিউজ্জামান গ্রেফতারের পর পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি খুলনায় এক সার্জনের সহযোগী ছিলেন। সেখানে পুরুষদের তৃতীয় লিঙ্গে রূপান্তরিত করা হতো। সেখানে কাজ শিখে ঢাকায় চলে আসে তিনি। এরপর ঢাকায় এসে পার্লারের আড়ালে তিনি নিজেই সার্জন সেজে শুরু করেন এই ব্যবসা। ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া এই চক্রের আর কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। এ কাজের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও ওষুধ সব চীন থেকে নিয়ে এসেছে চক্রটি।

জিজ্ঞাসাবাদে হাদিউজ্জামান জানান, সার্জারির আগে হরমোন প্রয়োগ করে তাদের নারীসুলভ শরীর করা হয়। এরপর সার্জারি করা হয়।এসব সার্জারি তিনি নিজেই করতেন বলে স্বীকার করেছেন।গ্রেফতাররা শতাধিক মানুষের কাছ থেকে অবৈধ উপায়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বিষয়টি স্বীকারও করেছে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে। এ চক্রের সঙ্গে জড়িত বাকি সদস্যদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলেও জানায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

আরও দেখুন
Back to top button
Bangladeshi mountaineer Babar Ali climbs Mount Everest সাঁতারের নিষিদ্ধ পোশাকে নারীদের ফ্যাশন শো সৌদিতে অভিনেতা জয় ও মিষ্টি জান্নাতের চুমুর দৃশ্য কোথায়?