বাড়ি বাংলাদেশ ভোজ্যতেলের দাম এক বছরে ৯ বার বাড়ল

ভোজ্যতেলের দাম এক বছরে ৯ বার বাড়ল

1
ভোজ্যতেলের দাম এক বছরে ৯ বার বাড়ল

সর্বশেষ সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে অক্টোবর মাসে। ক্রেতাদের প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতে হয়েছে ১৬০ টাকায়। এই নিয়ে গত এক বছরে ৯ বার বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। গত বছর অক্টোবর মাসে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হয় ১০০ টাকায়।এ বছর ২৫ অক্টোবর ১ লিটার বোতল সয়াবিন তেল কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হয়েছে ১৬০ টাকা। অর্থাৎ এক বছরে ৬০ শতাংশ বেশি দাম দিতে হচ্ছে ভোক্তাদের।

বুধবার থেকে বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতে হচ্ছে লিটারে ৭ টাকা বাড়তি দাম দিয়ে। অর্থাৎ এত দিন যারা ১৫৩ টাকা লিটার দরে সয়াবিন তেল কিনছিলেন, এখন কিনতে হচ্ছে ১৬০ টাকা লিটার দরে।ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ এবং বাজার সূত্রে জানা গেছে, অক্টোবর ২১ তারিখ পর্যন্ত ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে ৯ বার। 

পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল কেনার ক্ষেত্রেও অনেকটা একই রকম বাড়তি দাম গুনতে হবে ভোক্তাদের। অর্থাৎ সয়াবিনের ৫ লিটারের বোতলের দাম গতকাল পর্যন্ত ছিল গড়ে ৭২৮ টাকা, আজ থেকে দাম ৭৬০ টাকা। বোতলজাতের পাশাপাশি খোলা সয়াবিন ও খোলা পাম তেলের দামও বাড়ানো হয়েছে।

গত বছর অক্টোবরে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১০০ থেকে ১০৫ টাকা। গত বছর নভেম্বরে তেলের দাম এক মাসে দুই বার দাম বৃদ্ধি পায়। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দাম ছিল ১১৪-১১৮ টাকা। শেষ সপ্তাহে দাম বেড়ে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলে কিনতে হয় ১২০-১২৫ টাকায়। ডিসেম্বরে দাম স্থির থাকলেও আবার বেড়েছে এই বছরে জানুয়ারি থেকে।

আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিবেচনায় নিয়ে নতুন দর নির্ধারণ করা হয়েছে বলে দাবি বাংলাদেশ ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী ও বনস্পতি উৎপাদক সমিতির। সমিতিটি গতকাল সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলেছে, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করেই নির্ধারণ করা হয়েছে নতুন দর।

এই বছরেই এখন পর্যন্ত বেড়েছে ৬ বার। জানুয়ারিতে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম বাড়ে ৫ টাকা করে। এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১২৫ টাকা থেকে বেড়ে ১৩০-১৩৪ দরে বিক্রি হয়। প্রতিবার দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। সর্বশেষ দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে একই কথা বলেন বাংলাদেশ ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী ও বনস্পতি উৎপাদক সমিতি। তারা দাবি করে, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিবেচনায় নিয়ে নতুন দর নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রতি মাসে এক লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে দেশে। এক টনে হয় এক হাজার লিটার। লিটারে ৭ টাকা বাড়তি এলে মাসে ৭০ কোটি টাকা বাড়তি মুনাফা পাবেন ব্যবসায়ীরা।খুচরার পাশাপাশি ভোজ্যতেলের মিলগেট মূল্য ও পরিবেশক মূল্যও নতুন করে নির্ধারণ করা হয়েছে। যেমন খোলা সয়াবিন তেলের এক লিটারের মিলগেট মূল্য ১৩৪ ও পরিবেশক মূল্য ১৩৫ টাকা, এক লিটার বোতলের মিলগেট মূল্য ১৫০ ও পরিবেশক ১৫৪ টাকা, পাঁচ লিটার বোতলের মিলগেট মূল্য ৭২০ ও পরিবেশক মূল্য ৭৪০ টাকা। এ ছাড়া এক লিটার পাম তেলের মিলগেট মূল্য ১১৬ ও পরিবেশক মূল্য ১১৭ টাকা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রী ও সচিব অনুমোদন করার পরই সমিতি গতকাল বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। তবে ভোজ্যতেলের নতুন দর বিষয়ে ৪ অক্টোবর বিটিটিসি যে প্রতিবেদন পাঠায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে, সেখানে দাম বৃদ্ধির কারণের মধ্যে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার বিপরীতে মার্কিন ডলার শক্তিশালী হওয়া ও পণ্য পরিবহনে জাহাজভাড়া বৃদ্ধির কথা বলা হয়।