কূটনীতিবাংলাদেশ

বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে পরিবর্তন এনেছে

বাংলাদেশের সঙ্গে নির্বাচন পূর্ব ও পরবর্তী আচরণে পরিবর্তন এনেছে যুক্তরাষ্ট্র। নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসনসহ অন্যান্য নাগরিক অধিকার বিষয়ে ওয়াশিংটন যেমন সরব ছিল, তেমনটি এখন দেখা যাচ্ছে না। ইতোমধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক চিঠিতে নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক সম্পর্কসহ আরও কয়েকটি ক্ষেত্রে দুই দেশ কাজ করতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেছেন, সামনের দিনগুলোতে অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি পেলেও সম্পর্ক সম্প্রসারণের সুযোগ কম।

এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার মো. শহীদুল হক বলেন, ’আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতি হঠাৎ পরিবর্তন হয় না। সময় এবং ভৌগোলিক ক্ষেত্রে তাদের নীতির একটি ধারাবাহিকতা থাকে।’

এটি ধরে নেওয়া যায় যে তাদের পররাষ্ট্রনীতি হয়তো কিছুটা সফল হয়েছে অথবা হয়নি। এটি বোঝা যায় যে তারা বাস্তবতা মেনে নিয়েছে এবং সামনের দিকে এগোতে চায় বলেও তিনি জানান।

তিনি বলেন, ‘সামনের দিনগুলোতে ব্যবসা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বেশি যোগাযোগ দেখা যাবে এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তারা গণতন্ত্র, আইনের শাসন, ন্যায্যতা, মানবাধিকার নিয়ে কথা বলবে।’

শুধু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নষ্ট করবে না। বাংলাদেশ কিউবা বা উত্তর কোরিয়া নয়। এটি বুঝতে হবে বলেও তিনি জানান।

তবে মো. শহীদুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ককে আরও উচ্চতায় নেওয়ার জন্য যে রাজনৈতিক স্বার্থ ও প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন, সেটি আছে বলে আমার মনে হয় না।’

শ্রম অধিকার:

যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান শ্রম অধিকার এবং এটির অজুহাত দিয়ে মার্কিন প্রশাসন বিভিন্ন দেশের শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারে।

এ বিষয়ে আরেক সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে কথা বলছিল, সেটি এখন আর নেই। বরং সমঝোতার সুর দেখা যাচ্ছে। এটি নিয়ে কিছু রাজনীতিক উৎফুল্ল এবং কিছু হতাশ। আওয়ামী লীগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের চিঠিটি জরুরি ছিল এবং এ কারণে বিএনপি হতাশ। তবে আমার মনে হয় দুইপক্ষের কারও প্রতিক্রিয়া হয়তো সঠিক নয়।’

শ্রম অধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সামনের দিনগুলোতে আরও বেশি যোগাযোগ হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা যেসব সুপারিশ করছে সেগুলোর সব আমাদের পক্ষে হয়তো মেনে নেওয়া সম্ভব হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘শ্রমিক নেতা কেউ আটক থাকলে হয়তো ছেড়ে দেওয়া সম্ভব হবে। কিন্তু এ মুহূর্তে বেতন বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে না। এটি বাস্তবতা।’

বাংলাদেশের শ্রম অধিকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কিন্তু এর পরিপ্রেক্ষিতে কোনও ব্যবস্থা নেবে নাকি শুধু মৌখিকভাবে চাপ বজায় রাখবে, সেটি এখন দেখার বিষয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button