বাড়ি রাজনীতি বিএনপি রাজপথে ফেরার চেষ্টা বিএনপির: শান্তিপূর্ণ বড় জমায়েত

রাজপথে ফেরার চেষ্টা বিএনপির: শান্তিপূর্ণ বড় জমায়েত

0
রাজপথে ফেরার চেষ্টা বিএনপির শান্তিপূর্ণ বড় জমায়েত

সরকারবিরোধী আন্দোলনে কিছুদিন বিরতির পর আবার রাজপথে ফিরছে বিএনপি। আজ শুক্রবার জেলায় জেলায় ও আগামীকাল শনিবার ঢাকাসহ মহানগর পর্যায়ে কালো পতাকা মিছিল করবে দলটি। এবার লক্ষ্য, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন ও বড় জমায়েত করা। এর মাধ্যমে রাজপথের স্বাভাবিক কর্মসূচিতে ফিরতে চান দলটির নেতাকর্মীরা।

বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর প্রথম কর্মসূচিতে বড় জমায়েত করার প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। বিশেষ করে ঢাকায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিলে বিএনপি আবার তাদের জনসমর্থনের প্রমাণ দিতে চায়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চড়া দাম, কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং সংসদ বাতিল, সরকারের পদত্যাগসহ এক দফা দাবিতে এই কালো পতাকা মিছিল করবে বিএনপি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একজন নীতি-নির্ধারক বলেন, নির্বাচন বর্জন করে জনগণ বিএনপিকে সমর্থন দিয়েছে।

নির্বাচনের পর যেহেতু কোনো কর্মসূচি ছিল না, তাই বড় জমায়েত করে সেই সমর্থনের বহিঃপ্রকাশ ঘটানো তাঁদের লক্ষ্য। তবে কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ হবে এবং এর মাধ্যমে ধারাবাহিক স্বাভাবিক কর্মসূচিতে হাঁটতে চান তাঁরা।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত ৬ ও ৭ জানুয়ারি হরতাল পালন করেছে বিএনপি। নির্বাচন বর্জন করলেও নতুন নির্বাচনের দাবিতে সেই অর্থে আর কোনো কর্মসূচি দেয়নি দলটি।

শুধু গণসংযোগের কর্মসূচি পালন করেছে।
কালো পতাকা মিছিল সফল করতে গত বুধবার রাতে ঢাকা ও এর আশপাশের জেলা নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। এতে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়। সংঘাত এড়িয়ে নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন দলের নীতি-নির্ধারকরা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সরকারবিরোধী আন্দোলন থামেনি।

আমরা কিছুদিন বিরতি দিয়েছি মাত্র। আজ থেকে আবার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি শুরু হচ্ছে।’

নেতাকর্মীদের মাঠে ফেরানো চ্যালেঞ্জ
২৮ অক্টোবরের পর সেই অর্থে ঢাকায় বড় কোনো কর্মসূচি পালন করেনি বিএনপি। গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় শোভাযাত্রা করলেও তা সরকারবিরোধী আন্দোলন কর্মসূচি ছিল না। নির্বাচনের আগের কর্মসূচিগুলোতে নেতাকর্মীদের ব্যাপক সমাগম হলেও এখন সেই ধরনের জমায়েত হবে কি না, তা নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সংশয় আছে। কারণ, নির্বাচনের আগে নেতাকর্মীরা সরকার পতনের প্রত্যাশায় আন্দোলন করেছিলেন। লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় নেতাকর্মীরা স্বরূপে মাঠে ফিরতে না-ও পারেন। তা ছাড়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অনেক নেতাকর্মী এখনো কারাগারে আছেন। অনেকে মাত্র জামিন নিয়ে বের হয়েছেন। দীর্ঘ কারাবরণে ধকল না কাটতেই তাঁরা মাঠে ফেরার কথা নয় বলে মনে করছেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, শনিবার দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে কালো পতাকা মিছিল শুরু হবে। এই কর্মসূচি বিষয়ে ডিএমপিকে অবহিত করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। মৌখিকভাবে অনুমতি দিয়েছে পুলিশ।

একই দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, এলডিপি, লেবার পার্টিসহ অন্যান্য দল ও জোট পৃথকভাবে কালো পতাকা মিছিল করবে।

নির্বাচনের পর বিএনপির পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, গুলশানে চেয়ারপারসন কার্যালয়সহ সারা দেশে অনেক জেলা কার্যালয় খুলেছে। নেতাকর্মীদের অনেকে আত্মগোপনে থেকে প্রকাশ্যে কার্যালয়ে আসা-যাওয়া শুরু করতে দেখা গেছে।

গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশের ব্যাপক লোক সমাগম এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর নেতাকর্মীদের ওপর ধড়পাকড় শুরু হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের ভাষ্য অনুযায়ী, ওই সময় থেকে নির্বাচন পর্যন্ত প্রায় ২৩ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।