বাড়ি বাংলাদেশ নির্বাচন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে যে আসনগুলো: কী ঘটছে এখানে, পর্ব ০৩

আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে যে আসনগুলো: কী ঘটছে এখানে, পর্ব ০৩

0
আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে যে আসনগুলো ০৩

জাফর ঠেকাতে একাট্টা আওয়ামী লীগ, ইবরাহিমের পক্ষে বাড়ছে জনসমর্থন
স্টাফ রিপোর্টার কক্সবাজার থেকে জানান, কক্সবাজার-১ (চকরিয়া- পকুয়া) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত জাফর আলমের দুর্গে হানা দিচ্ছেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। যতই দিন যাচ্ছে ততই ইবরাহিমের পক্ষে সমর্থন বাড়ছে। ইবরাহিমের পক্ষে একাট্টা বিভিন্ন সময়ে জাফর আলমের হাতে নিগৃহীত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বড় একটি অংশ। স্থানীয় নেতাদের পাশাপাশি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে শীর্ষ নেতারাও ইবরাহিমের পক্ষে গণসংযোগে অংশ নিয়েছেন। ইতিপূর্বে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে জাফর আলমকে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। সব মিলিয়ে চরম বেকায়দায় আছে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও ট্রাক মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী জাফর আলম। জাফর আলমের অনুসারী ও সমর্থকরা জানান, কল্যাণ পার্টির প্রার্থীর পক্ষে তাদের নানামুখী চাপ ও ভয়ভীতি প্রয়োগ করা হচ্ছে।

২০১৮ সালে নির্বাচিত জাফর আলম এবার মনোনয়ন বঞ্চিত হন। তার পরিবর্তে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পান কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দীন আহমদ। তবে তার প্রার্থিতা ঋণখেলাপির দায়ে বাতিল হয়।

সালাহউদ্দীন আহমদও কল্যাণ পার্টির প্রার্থী ইবরাহিমের পক্ষে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। বুধবার বিকালে চকরিয়া মহিলা কলেজের হলরুমে সালাহউদ্দীন আহমদ চকরিয়া ও পেকুয়ার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা ডেকে কল্যাণ পার্টির প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের হাতঘড়ি মার্কার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান।

সভায় সালাহউদ্দীন আহমদ বলেন,‘ প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ ইবরাহিমের পক্ষে নির্বাচন করতে, এ জন্য সবাই তার পক্ষে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়যুক্ত করতে হবে। এতেই চকরিয়া ও পেকুয়ার মানুষ সন্ত্রাসী ও ডাকাতদের কবল থেকে মুক্ত হতে পারবে।’

এদিকে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলা, চকরিয়া পৌরসভা এবং মাতামুহুরী সাংগঠনিক থানা আওয়ামী লীগের পদবিধারী নেতারা জাফর আলমের পক্ষে এখনো নির্বাচনী মাঠে কাজ করছেন। দুই উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের সদস্যসহ ১৭ জন জনপ্রতিনিধি গত মঙ্গলবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
অপরদিকে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম সুষ্ঠু নির্বাচনে শঙ্কা প্রকাশ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর বুধবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এতে তিনি বলেন,‘গত ৫ বছরে সংসদ সদস্য জাফর আলম চকরিয়া ও পেকুয়ায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের অভয়াশ্রমে পরিণত করেছেন। সন্ত্রাসীদের রাজনৈতিক পদে বসিয়েছেন ও জনপ্রতিনিধি বানিয়েছেন। তার মদদপুষ্ট জনপ্রতিনিধি ও সন্ত্রাসীরা কল্যাণ পার্টির কর্মী-সমর্থকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি দিচ্ছে। এসব অস্ত্রধারী চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হবে।

কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘চকরিয়া ও পেকুয়ায় শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। এতে সাধারণ মানুষ তাকে গ্রহণ করছেন। নৌকার প্রার্থী না থাকায় তার জয় সুনিশ্চিত বলে তিনি মনে করেন।

আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম বলেন, ‘বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের পক্ষে কাজ করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতাকর্মীদের চাপ প্রায়োগ করা হচ্ছে। এ অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।