বাড়ি রাজনীতি বছরজুড়ে বিএনপির কর্মকাণ্ড: শুরুতে চাঙ্গা, শেষে পথহারা

বছরজুড়ে বিএনপির কর্মকাণ্ড: শুরুতে চাঙ্গা, শেষে পথহারা

2
বছরজুড়ে বিএনপির কর্মকাণ্ড শুরুতে চাঙ্গা শেষে পথহারা

সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বছরের শুরু থেকেই রাজপথে সক্রিয় ছিল বিএনপি। দীর্ঘ সময় ধরে রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি নির্বাচন সামনে রেখে প্রথমেই দলের কর্মীদের চাঙা করতে সারাদেশেই বিক্ষোভ, সমাবেশ-মহাসমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের কয়েক মাস আগ থেকে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে পদযাত্রা, অবস্থান কর্মসূচি, গণ-মিছিল ও রোড মার্চ কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে ব্যাপক সরগরম করে বিএনপি ও তার মিত্ররা। শুরু থেকে ধারাবাহিকভাবে এসব কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন হলেও গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় দলটির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে কঠোর হয়ে ওঠে সরকার। গ্রেপ্তার করা হয় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির বেশ কজন সিনিয়র নেতাকে। গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যায় মাঠে সক্রিয় থাকা দলটির বহু নেতাকর্মী। সরকার পতনের আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে শেষপর্যন্ত নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দেয় বিএনপিসহ অন্তত ৬০টি দল।
গুগল নিউজে ফলো করুন আরটিভি অনলাইন

সমমনা দলগুলোকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন

গত বছরের শেষের দিকে ২০ দলীয় জোট ভেঙে দেয় বিএনপি। মূলত সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের গতি ও ব্যাপ্তি বাড়াতে এমন সিদ্ধান্ত নেয় দলটি। পরবর্তীতে কোনো না কোনোভাবে ২০-দলীয় জোটে ছিল—এমন ১২টি দল মিলে ‘১২–দলীয় জোট’ গঠন করা হয়। এর বাইরে ১১ দল নিয়ে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ৭ দল নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ এবং ১৫টি সংগঠনের সমন্বয়ে সমমনা গণতান্ত্রিক জোট গঠন করা হয়। এ ছাড়া এলডিপি, গণফোরাম, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিএনপির দাবিগুলোর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে রাজপথে নামে। তবে সিদ্ধান্ত হয় যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচিতে সবাই যার যার অবস্থান থেকে অংশ নেব। সেই অনুযায়ী বছরব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে বেশ সক্রিয় ছিল বিএনপি ও মিত্ররা।

সরকার পতনের এক দফা কর্মসূচি

বিএনপি যখন সরকার পতনের এক দফা দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করে তখন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ছয় মাস বাকি। গত ১২ জুলাই রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি আয়োজিত সমাবেশ থেকে ‘সরকারের পদত্যাগের এক দফা’ দাবিতে সমমনা দল ও জোটকে সঙ্গে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে ঢাকাসহ সারাদেশে পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা করে বিএনপি।

দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল তখন বলেন, এই সংগ্রাম অস্তিত্বের সংগ্রাম। আসুন, দুর্ভেদ্য উত্তাল আন্দোলনের মধ্য দিয়ে লুটেরা ফ্যাসিবাদী সরকার সরিয়ে সত্যিকার অর্থে জনগণের রাষ্ট্র নির্মাণ করি।

এ সময় তিনি সরকারকে পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচি দিয়ে সরকারপ্রধানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেন মির্জা ফখরুল।

গত ১২ জুলাই সরকার পতনের কর্মসূচি ঘোষণার পর দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও শহরে টানা রোডমার্চ ও পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে বিএনপি ও তার মিত্ররা।

গণ-অভ্যুত্থানের চিন্তা

ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে গণ-অভ্যুত্থান ঘটিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটাতে ব্যাপক জোর দেয় বিএনপি। এজন্য বছরের শুরু থেকেই সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করে দলটি। তবে বিএনপির নেতারা গণ-অভ্যুত্থানের কথা বললেও জোরালো কর্মসূচি নিয়ে রাজনীতির মাঠে অবস্থান নিতে পারেনি দলটি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও বলেছিলেন, এভাবে গণ-আন্দোলন সৃষ্টি এবং বর্তমান ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে সফল হওয়া কঠিন।

কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক ও বার্তা

বাংলাদেশের নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছিল ততই পশ্চিমা দেশগুলোর কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়তে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে একাধিক প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে বারবার বার্তা দেওয়া হয়। এমনকি নির্বাচনে বাধাদানকারীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করার নীতিমালাও ঘোষণা করে দেশটি। বিএনপিও বিদেশি কূটনৈতিকদের কাছে সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরে। বছরে শুরু থেকেই বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। এসব বৈঠকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন তারা।

বিএনপির নেতারা কূটনীতিকদের জানান, নির্বাচন সামনে রেখে সরকার ভীতি সৃষ্টি করছে। নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যে মামলা, গ্রেপ্তার ও হামলা করা হচ্ছে। এ ছাড়া এই সরকার বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যবহার করছে। তবে শেখ হাসিনার পক্ষে ভারতের অবস্থান নিয়ে কড়া সমালোচনা করে বিএনপি।

গত ১৮ আগস্ট ‘হাসিনার পক্ষ নিয়ে আমেরিকাকে বার্তা ভারতের’ শিরোনামে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার সরকার দুর্বল হয়ে পড়লে ভূরাজনৈতিক দিক থেকে তা ভারত এবং আমেরিকা কারও পক্ষেই সুখকর হবে না। ভারতের এমন বার্তাকে অত্যন্ত ‘দুর্ভাগ্যজনক’ জানিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, আমরা আশা করি, ভারত বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে মর্যাদা দেবে এবং এই দেশে সত্যিকার অর্থেই সব দলের অংশগ্রহণে, সবার সদিচ্ছায় একটি নিরপেক্ষ-নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যাপারে পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করবে।

সংলাপ প্রত্যাখ্যান

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছিল ততই রাজনৈতিক অঙ্গনে সংলাপের বিষয়টি জোরালো হচ্ছিল। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকারের পদত্যাগের পাশাপাশি নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নেওয়ার পর সংলাপ হতে পারে। তবে এটি মানতে নারাজ আওয়ামী লীগ। তারা জানান, সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের দাবি থেকে বিএনপি সরে এলে সংলাপ হতে পারে। দুই পক্ষের এমন অনড় অবস্থানের মধ্যে গত ২৩ মার্চ প্রধান নির্বাচন কমিশনার সংলাপের আমন্ত্রণ জানালে সেটাও প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি ও মিত্ররা।

বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তখন বলেছিলেন, বর্তমানের মূল রাজনৈতিক সংকট নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কোনো আলোচনা অথবা সংলাপ ফলপ্রসূ হবে না এবং তা হবে অর্থহীন।

অন্যদিকে বছরের শেষ দিকে গত নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে শর্তহীন সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। সংলাপের কথা নাকচ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, সংলাপের সময় শেষ হয়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের চিঠির জবাবে বিএনপি জানায়, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে সংলাপে বিএনপির আপত্তি নেই। কিন্তু দলের মহাসচিবসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারাগারে রেখে সংলাপ করার মতো পরিবেশ নেই।

আলোচিত ২৮ অক্টোবর, গ্রেপ্তার ও আত্মগোপন

বিএনপির সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে বছরের শুরু থেকে শান্তিপূর্ণ থাকলে গত ২৮ অক্টোবর সহিংসতায় রূপ নেয়। যদিও দিনটিকে ঘিরে আগে থেকেই সংঘাতের আশঙ্কা করেছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ, ওই সমাবেশ ঘিরে উদ্বেগের কারণ ছিল ১৭ বছর আগের স্মৃতি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘিরে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের পাশাপাশি এলাকায় সমাবেশ ছিল। কিন্তু হঠাৎ দলগুলোর নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। দিনভর সংঘাত, সহিংসতায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়। একপর্যায়ে জারি হয় জরুরি অবস্থা। সেই একই ইস্যু নিয়ে চলতি বছরের ২৮ অক্টোবর এই তিন দলের সমাবেশ ঘিরে সংঘাত সৃষ্টির আশঙ্কা আগে থেকেই ধারণা করা হয়েছিল, ঘটলও তাই। বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে এক পুলিশ সদস্য নিহতের পাশাপাশি একজন রাজনৈতিক কর্মীরও মারা যায়। এ ছাড়া ৪১ জন পুলিশ সদস্য ও ২৮ জন সাংবাদিকসহ আরও অনেকে আহত হয়েছেন। পুলিশের হিসাবে, ৫৫টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি পুলিশ বক্স-পোড়ানোর পাশাপাশি প্রধান বিচারপতির বাসভবনেও হামলা চালানো হয়। এসব ঘটনায় কঠোর হয়ে ওঠে সরকার।

এসব ঘটনার পর রাজধানীর বিভিন্ন থানায় বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা করে পুলিশ। দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গ্রেপ্তারে অভিযানে নামে র‌্যাব-পুলিশ। শুরুতেই দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর একে একে মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জহির উদ্দিন স্বপন, মজিবুর রহমান সারোয়ারসহ বহু নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অন্যদিকে গ্রেপ্তার এড়াতে বিএনপি ও তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয়, মহানগর, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়নসহ সব স্তরের নেতাই আত্মগোপনে চলে যায়। দল থেকেও তাদের গ্রেপ্তার এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়।

বহিষ্কার মিশন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমরসহ অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জন নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করায় তাদের বহিষ্কার করা হয়। এরমধ্যে সবচেয়ে আলোচিত শাহজাহান ওমর। ঝালকাঠি-১ আসন থেকে নৌকার প্রার্থী হওয়ায় শাহজাহান ওমরকে দলের সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ ছাড়া উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান, তাঁতিবিষয়ক সহসম্পাদক রাবেয়া সিরাজ, নির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আবু জাফর, শাহ শহীদ সারোয়ার, মতিউর রহমান মন্টু ও খন্দকার আহসান হাবিব ও এ কে এম ফখরুল ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়।

জেলা পর্যায়ের নেতাদের শেরপুর জেলা বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক জায়েদুর রশিদ শ্যামল, সদস্য অ্যাডভোকেট এম আব্দুল্লাহ, ঢাকা ধামরাই পৌর-বিএনপির সভাপতি দেওয়ান নাজিম উদ্দিন মঞ্জু, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আব্দুল মতিনসহ আরও অনেককেই বহিষ্কার করে দলটি।

হরতাল-অবরোধ

গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ ঘিরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পরদিন থেকে দফায় দফায় হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে দলটি ও তার মিত্ররা। ১১ দফায় ২২ দিন অবরোধ এবং ৪ দফায় পাঁচ দিন হরতাল পালন করে বিএনপি।

ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে, ২৮ অক্টোবর থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে মোট ২৮৪টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে ২৮০টি যানবাহন ও ১৫টি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অগ্নিসংযোগকৃত যানবাহনের মধ্যে বাস ১৭৫টি, ট্রাক ৪৫টি, কাভার্ডভ্যান ২৩টি, মোটরসাইকেল ৮টি ও অন্যান্য ২৯টি গাড়ি রয়েছে।

ভোট বর্জনসহ অসহযোগ আন্দোলনের ডাক

দফায় দফায় হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালন করে নির্বাচনের ঠিক ১৭ দিন আগে (২০ ডিসেম্বর) অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয় বিএনপি। অসহযোগ আন্দোলনকে বিএনপির মিত্ররাও সমর্থন জানিয়েছে।

আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোটগ্রহণে নিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, নির্বাচনের নামে বানর খেলায় যাবেন না। ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। নির্বাচনে কারা এমপি হবেন সেই তালিকা তৈরি হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, সরকারকে সকল প্রকার কর, খাজনা, পানি, গ্যাস এবং বিদ্যুৎ বিল দেওয়া স্থগিত রাখার অনুরোধ করছি। ব্যাংক খাতের মাধ্যমে সরকার সবচেয়ে বেশি অর্থ লুটপাট করেছে। ফলে ব্যাংকে টাকা জমা রাখা নিরাপদ কিনা সেটি ভাবুন। একইসঙ্গে মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় অভিযুক্ত ‘লাখ লাখ রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে’ আজ থেকে আদালতে হাজিরা দেওয়া থেকে বিরত থাকারও আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা কোনো বিষয় নয়। সদিচ্ছা থাকলে এখনও আলোচনা বা সমঝোতার মাধ্যমে সংকট সমাধান সম্ভব। জনগণ, গণতন্ত্র রক্ষা ও অর্থনীতি শক্তিশালী করতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের বিকল্প নেই। দেশে সংঘাত সৃষ্টি হোক, সেটি কেউ চায় না।