বাড়ি রাজনীতি আওয়ামী লীগ মাগুরায় গিয়েই আচরণবিধি লঙ্ঘন হলো সাকিবের

মাগুরায় গিয়েই আচরণবিধি লঙ্ঘন হলো সাকিবের

0
মাগুরায় গিয়েই আচরণবিধি লঙ্ঘন হলো সাকিবের

সাকিব আল হাসান মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার পর বুধবার (২৯ নভেম্বর) প্রথম নির্বাচনী এলাকায় যান। মাগুরায় পৌঁছে তিনি একাধিকবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। আজ দুপুরে জেলার দলীয় কার্যালয়ে সবাইকে নির্বাচন আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান সাকিব।

দলের নেতাকর্মীরা বলেন, বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আছাদুজ্জামান স্টেডিয়ামে মাগুরাবাসীর ব্যানারে আয়োজিত এক নাগরিক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন সাকিব। সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে নিজের জন্য এবং আওয়ামী লীগের জন্য ভোট প্রার্থনা করেন। এ জন্য স্টেডিয়ামে একটি মঞ্চও তৈরি করা হয়।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধিমালায় বলা হয়েছে, কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা এর মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি ভোট গ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের তিন সপ্তাহ সময়ের আগে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে পারবেন না। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি। সে হিসাবে ১৫ ডিসেম্বরের আগে কেউই নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারবেন না।

নিজ নির্বাচনী এলাকায় আসলে সাকিবকে সংবর্ধনা জানিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী গাড়ি ও মোটরসাইকেল নিয়ে শোভাযাত্রা করে মাগুরা শহরে প্রবেশ করেন।

স্থানীয়রা জানান, দুপুর ১২টার দিকে বিশাল গাড়ির বহর নিয়ে ঢাকা থেকে সড়কপথে মাগুরায় আসেন সাকিব। মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের এই প্রার্থীকে অভ্যর্থনা জানাতে সকাল থেকে মাগুরা ও ফরিদপুরের সীমান্ত গড়াই সেতু এলাকায় অবস্থান নেন হাজারো নেতাকর্মী ও সমর্থক। কামারখালীর গড়াই সেতু থেকে মাগুরা শহরে ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সাকিবের প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এসময় ওয়াপদা বাজার ও কামারখালী সেতু এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। দুপুরে সাকিবের গাড়িবহর যখন মাগুরা শহরে প্রবেশ করে, তখন সেখানে যানজটের সৃষ্টি হয়।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধিমালা অনুসারে, কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তাদের মনোনীত প্রার্থী বা তাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি কোনো ট্রাক, বাস, মোটরসাইকেল বা অন্য কোনো যান্ত্রিক যানবাহন নিয়ে মিছিল বের করতে পারবেন না। মহড়াও করা যাবে না।

আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ হায়দার বলেন, তিনি (সাকিব) যেহেতু একজন সেলিব্রেটি (তারকা), জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক, এখানে তার ভক্তরা জড়ো হয়েছেন। এখানে রাজনৈতিকভাবে কেউ জড়ো হননি। এখানে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এ কারণে আমার মনে হয়, আমরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করিনি।

এ বিষয়ে সাকিব জনদুর্ভোগের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে মাগুরা-১ আসনের এই প্রার্থী বলেন, অনেক সময় অনেকে অতি-উৎসাহী হয়ে অনেক কিছু করে ফেলেন। তবে আমি সবাইকে অনুরোধ করব, সবাই যেন সংযত থাকেন। পোস্টার লাগানো, লিফলেট লাগানো, মাইক বাজানো-সবকিছুই যেন করা হয়—এই ভেবে যে মানুষের কষ্ট যেন না হয়। এ সময় সাকিব সবাইকে আচরণবিধি মেনে চলার অনুরোধ করেন।

তিনি আরও বলেন, এটা আমাদের দল, আমাদেরই প্রবলেম (সমস্যা) হবে, যদি আচরণবিধি আমরা মেনে না চলি।

এ বিষয়ে মাগুরার জেলা প্রশাসক ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ গণমাধ্যমকে বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে, এমন কোনো খবর এখনও আমার কাছে আসেনি। আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেটরা কাজ করছেন চারদিকে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো অভিযোগ লিখিতভাবে কেউ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।