এক্সক্লুসিভঢাকাবাংলাদেশ

দেশের অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে বাংলাদেশের ভবিষ্যতে বিশ্বাস রাখেনঃদেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনে অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ইআরএফ ডায়ালগ অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। সভাপতিত্ব করেন ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভী।

অনুষ্ঠানে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, গত দেড় দশকে দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হলেও বৈষম্য বেড়েছে। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি, টাকার বিনিময় হার ও সুদের হার—অর্থনীতির এই তিন চলকের মধ্যে সমন্বয় নেই। চাপ মোকাবিলায় সরকার কিছু সাশ্রয়ী পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু কোনো সমন্বিত উদ্যোগ এখনো দেখা যাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ চাপে থাকলেও এখনো সংকটে পড়েনি। কিন্তু যদি চাপ অস্বীকারের মনোভাব থাকে এবং এই চাপ সময়মতো ঠিকভাবে মোকাবিলা করা না হয়, তাহলে তা কাঠামোগত সমস্যায় রূপান্তরিত হবে। এটা অবধারিত সত্য। একই সঙ্গে দেশের অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে হলে বাংলাদেশের ভবিষ্যতে বিশ্বাস রাখেন, এমন শক্তিকে সামনে আনতে হবে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এসব কারণেই এসব সিদ্ধান্ত বারবার পরিবর্তন করতে হয়। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানগুলো ও তাদের কাজের মধ্যে সমন্বয় নেই। এভাবে বাংলাদেশে যত সমস্যা আছে, তা আরও বেশি জটিল হয় সমন্বয়হীনতা ও দক্ষতার অভাবের কারণে।

দেশে বর্তমানে যে অর্থনৈতিক অস্থিরতা চলছে, তা স্বীকার করে নিয়ে সামনে এগোতে পরামর্শ দিয়েছেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, সরকারের মধ্য থেকে যাঁরা বলছেন, আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে, তাঁরা কোনো উপকারী মন্তব্য করছেন না। বরং এতে বাজারে আরও নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তাঁরা যত অস্বীকারের মনোভাবে থাকবেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা তত বিলম্বিত হবে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উচ্চবর্গীয় মানুষেরা বৈশ্বিক উচ্চবর্গে ঢুকে গেছেন। তাঁরা প্রতিনিয়ত দুই নৌকায় পা দিয়ে চলেন, বিদেশে বিনিয়োগ করেন আর প্রতিমুহূর্তে দেশ ছেড়ে যাওয়ার চিন্তা করেন; অর্থাৎ তাঁরা বাংলাদেশের ভবিষ্যতে বিশ্বাস করেন না। তাঁদের বিপরীতে বাংলাদেশের ভবিষ্যতে বিশ্বাস রাখেন—এমন শক্তিকে যদি সামনে না আনা যায়, তাহলে আমরা সামনে এগোতে পারব না।’

দেশে উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বৈষম্যও বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সিপিডির এই বিশেষ ফেলো। একই সঙ্গে লুণ্ঠনের ধারা অব্যাহত আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আশির দশকে শিল্পঋণের নামে লুণ্ঠন হয়েছে, এরপর কয়েকবার পুঁজিবাজার লুণ্ঠন হয়েছে। এখন সরকারি প্রণোদনা আর অতিমূল্যায়িত প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে বিশেষ ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও প্রতিষ্ঠান সুবিধা পাচ্ছে।

এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় দায়িত্বশীল উদ্যোক্তাশ্রেণি তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। একই সঙ্গে দেশ নিয়ে যাঁরা ইতিবাচক চিন্তা করেন, তাঁদের সামনে নিয়ে আসতে বলেছেন তিনি। দেবপ্রিয় জানান, দেশে ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন উদ্যোক্তাশ্রেণির মধ্যে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নেতৃত্ব তৈরি হয় না। ফলে এই ব্যবসায়ীরা কারও প্রতি দায়বদ্ধ থাকেন না।

বাংলা ম্যাগাজিন / এমএ

আরও দেখুন
Back to top button
এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে ‘হানি ট্র্যাপ’ শিলাস্তি রহমান ‘Pushpa 2’ is coming to Bangladesh in Hindi ইব্রাহিম রাইসি যেভাবে ৫০০০ মানুষকে হত্যা করেছিলো