বাড়ি বিভাগ ঢাকা তুরাগ নদীতে নৌকাডুবিঃ নিহত ৫, নিখোঁজ ২

তুরাগ নদীতে নৌকাডুবিঃ নিহত ৫, নিখোঁজ ২

0
তুরাগ নদীতে নৌকাডুবি নিহত ৫ নিখোঁজ ২

ঢাকার গাবতলীর আমিনবাজার এলাকায় তুরাগ নদে আজ শনিবার বাল্কহেডের ধাক্কায় নৌকাডুবির ঘটনায় পাঁচটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ডুবে যাওয়া নৌকাটি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ১১০ ফুট গভীর থেকে ধরলা-৪ ক্রেন বোট দিয়ে বেলা তিনটার দিকে তোলে। এদিকে এ ঘটনায় বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক ফজলুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখনও আরও দুই জন নিখোঁজ রয়েছেন। রাত হয়ে যাওয়ায় আলোক স্বল্পতার কারনে উদ্ধার অভিযান স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

আগামীকাল রোববার সকাল থেকে নিখোঁজ বাকী ২ জনের উদ্ধারে কাজ করবে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। আজ শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সাভারে আমিনবাজার তুরাগ নদে ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকা কেবলার চর থেকে গাবতলীর দ্বীপনগর পাড়ে যাওয়া সময় নদীর মাঝপথে পৌঁছালে উভয় দিক থেকে দুই বালুভর্তি বাল্কহেড যাত্রীবাহী নৌকার ওপর উঠে যায়। এসময় অনেকে সাঁতরে তীরে পৌঁছালেও পাঁচ শিশু ও দুই নারী নিখোঁজ হন। নিখোঁজরা মুলত সিলেট ও সুনামগঞ্জের বাসিন্দা। কয়লার কাজ করতে তারা সিলেট থেকে এসেছিলে এই এলাকায় এসে কাজ করত।

নৌ পুলিশের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন নৌ পুলিশের জ্যেষ্ঠ পুলিশ সুপার খন্দকার ফরিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে বাল্কহেডটি চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত বাল্কহেডটি চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক ফজলুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

নৌকা ডুবির ঘটনায় আমিনবাজারের বড়দেশী এলাকার চমক জান দুই মেয়ে ও তিন নাতিকে হারিয়েছেন। তার মেয়েরা হলেন সোয়ালা (২০), রুপায়না (২৪) এবং তিন নাতি জেসমিন (২), আরমান (৫) ও ইমরান (৪)। চমক জানের মেয়েরা নদীর পাশে কয়লা লোড আনলোডের শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।

নৌকা ডুবির ঘটনায় বেঁচে ফেরা কাবিল হোসেন (২৬) জানান, ভোর সাড়ে ৫ টায় বড়দেশী গ্রাম হয়ে কেবলারচর থেকে গাবতলীর দ্বীপনগরে কাজের জন্য প্রতিদিনের মতো ট্রলারযোগে গাবতলীর উদ্দশ্যে রওয়ানা দেন। তুরাগ নদীর মাঝখানে আসলে বালুভর্তি বাল্কহেড দ্রুতগতিতে ট্রলারের সামনে চলে আসে। এসময় ট্রলারটি একটু পিছনে চলে আসে। তখন পিছন দিক থেকে আসা আরেকটি বালু ভর্তি বাল্কহেড ধাক্কা দেয়। এসময় দ্রতগতির সামনে থাকা বাল্কহেডটি ওপর উঠে গেলে আমাদের ট্রলারটি ডুবে যায়। আমি ছেলে সায়েমকে নিয়ে কোনরকমে সাঁতরে তীরে উঠি।

নৌকায় ১৮ জন যাত্রী ছিল। মাঝনদীতে যাওয়ার পর উত্তর দিক থেকে একটি খালি বাল্কহেড নৌকাটিকে ধাক্কা দিলে সেটি ডুবে যায়। ১৮ যাত্রীর মধ্যে ১০ জন সাঁতরে পাড়ে উঠলেও নারী ও শিশুসহ ৮ জন নিখোঁজ হয়। সকাল ৯টার দিকে সাভার ফায়ার সার্ভিসকে বিষয়টি জানানো হয়। দুপুর ১২টার দিকে দুই শিশু ও এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আরেকটি শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বিকেল পাঁচটার দিকে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়।