অপরাধএক্সক্লুসিভবাংলাদেশরাজধানী

ভুয়া ব্যাংক ডিপোজিটের মাধ্যমে অনলাইনে পণ্য কিনে প্রতারণা

ভুয়া ব্যাংক ডিপোজিটের মাধ্যমে বা টাকা জমা দেখিয়ে অনলাইনে বিভিন্ন দামি পণ্য কিনে সেই পণ্য আবার বিক্রি করতেন এক দম্পতি। গত চার বছর ধরে এভাবেই প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তাঁরা।ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার মহিদুল ইসলাম বলেন, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে কোনো চাকরি করেননি জাহিদ হাসান। অল্প সময়ের মধ্যে বড়লোক হওয়ার আশায় প্রতারণাকে বেছে নেন তিনি।

ঢাকার এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে গোয়েন্দা কর্মকর্তা পরিচয়ে অনলাইনে একটি ক্যামেরার অর্ডার বা ফরমাশ দেন জাহিদ হাসান রনি। ক্যামেরার মূল্য পরিশোধের জন্য বিক্রেতার কাছ থেকে ব্যাংক হিসাব নম্বরও নেন তিনি। ব্যবসায়ীর মুঠোফোনে বিকালের দিকে একটি বেসরকারি ব্যাংকের ক্যাশ ডিপোজিট মেশিনের (সিডিএম) মাধ্যমে ৫৫ হাজার টাকা টাকা জমা হয়েছে বার্তা আসে।

ওই বার্তা পেয়ে জাহিদ হাসানের পাঠানো লোকের কাছে ক্যামেরা বুঝিয়ে দেন ব্যবসায়ী।ব্যাংকের কর্মকর্তারা সিডিএম খুলে টাকার খাম সংগ্রহ করেন, তখন দেখেন এর ভেতরে এক হাজার টাকা। ৫৫ হাজার টাকা লেখা খামে মাত্র এক হাজার টাকা পেয়ে ব্যবসায়ীকে ফোন করে বিষয়টি জানান ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

ওই দম্পতি অনলাইনে কেনাকাটা ছাড়া বিমানের টিকিট জালিয়াতি, চাকরি দেওয়া, মেডিকেল কলেজে ভর্তি ও পরীক্ষার ফলাফল পরিবর্তনের কথা বলে টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল তাঁরা।গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় ক্যামেরা নিয়ে প্রতারণার ঘটনা ঘটে। পরে ওই ব্যবসায়ীর করা মামলায় প্রতারক জাহিদ হাসান ও তাঁর স্ত্রী উম্মে হাবিবাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত বুধবার ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।

ডিবি সূত্র জানায়, অনলাইনে জাহিদ মূলত দামি ইলেকট্রনিক পণ্য কিনতেন। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গ্রুপ খুলে এসব বিক্রি করতেন। পণ্য বিক্রির পর ওইসব অনলাইন গ্রুপ বন্ধ করে দিতেন এ দম্পতি। জাহিদের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন, রামপুরা, তেজগাঁও, নিউমার্কেট, রমনা থানায় সাতটি প্রতারণা মামলা রয়েছে। এ ছাড়া অসংখ্য সাধারণ ডায়েরি (জিডি) রয়েছে।

নিজেকে কখনো ডিবির বড় কর্মকর্তা, আবার কখনো মেজর পরিচয়ে অনলাইনে পণ্য কিনতেন জাহিদ হাসান। পণ্যের মূল্য ঠিক হওয়ার পর টাকা পরিশোধের জন্য বিক্রেতার ব্যাংক হিসাব চেয়ে নিতেন। ডিবি কর্মকর্তারা জানান, প্রতারণার জন্য ব্যাংকের সিডিএম মেশিনের লেনদেনের ব্যবস্থাকে বেছে নিয়েছিলেন তিনি।

পণ্য ফরমাশ করে ব্যাংক হিসাবে ভুয়া টাকা জমা দিতেন। বিক্রেতা টাকা জমা দেওয়ার বার্তা পাওয়ার পর তাঁকে ফোন করতেন জাহিদ। ব্যবসায়ীকে বলতেন সিডিএম টাকা জমা দিয়েছি। রাতের মধ্যে আপনার ব্যাংক হিসাবে টাকা জমা হয়ে যাবে। পরে টাকা জমা হওয়ার আগেই উবার থেকে লোক পাঠিয়ে পণ্য বুঝে নিতেন।

আরও দেখুন
Back to top button
এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে ‘হানি ট্র্যাপ’ শিলাস্তি রহমান ‘Pushpa 2’ is coming to Bangladesh in Hindi ইব্রাহিম রাইসি যেভাবে ৫০০০ মানুষকে হত্যা করেছিলো