বাড়ি অপরাধ কু-প্রস্তাবের অভিযোগে কুমিল্লায় ওসি ও এস আই এর বিরুদ্ধে মামলা

কু-প্রস্তাবের অভিযোগে কুমিল্লায় ওসি ও এস আই এর বিরুদ্ধে মামলা

0
কু প্রস্তাবের অভিযোগে কুমিল্লায় ওসি ও এস আই এর বিরুদ্ধে মামলা

কু-প্রস্তাবের অভিযোগে কুমিল্লার মেঘনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছমির উদ্দিন (৫০) ও উপ-পরিদর্শক (এস আই) মো. মোশাররফ হোসেন (৪০)-এর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক ভুক্তভোগী নারী। গতকাল কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ মামলাটি করেন ওই নারী। পরে আদালতের বিচারক মোয়াজ্জেম হোসেন সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে ওসি ছমির উদ্দিন বলেন, এই মহিলা ভীষণ উগ্র। আমরা আসামি গ্রেপ্তার করতে গেলে সে ওয়ারেন্ট চায়।ওয়ারেন্ট দেখালেও তিনি আমাদের আসামিকে আনতে দেননি। পরে আমরা তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেয়ায় মামলা করি। এরপর তিনি জেল থেকে বের হয়ে এসব করছেন। মামলা করতেই পারেন। এটা বানোয়াট মামলা।

এসআই মোশাররফ বলেন, আমাদের কাছে ভিডিও রেকর্ড আছে তিনি কী করেছেন। আমরা তাকে মহিলা কনসটেবল দিয়ে ধরে এনেছি। আমরা তাকে কুপ্রস্তাব দেইনি। সে খুবই উগ্র মহিলা। এগুলা তার বানানো। কুমিল্লার জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, আমি মাত্রই শুনলাম। এখনো কোর্ট থেকে কোনো কাগজপত্র পাইনি। কোর্ট ইন্সপেক্টরের সঙ্গে কথা বলে দেখি কী করা যায়।

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, মেঘনা থানার শিকিরগাঁও এলাকার প্রবাসী মাহমুদুল হাসানের স্ত্রী রুমানা রহমান জয়া (২৬) তাদের পারিবারিক ও আত্মীয়স্বজনের জায়গা জমির বিরোধ নিয়ে মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে বেশ কয়েকবার থানায় আসা-যাওয়া করে।

তাই ওসি ছমির ও এস আই মোশাররফ তাকে প্রায়ই ফোন করতো। একপর্যায়ে ওসি ছমির তাকে মেঘনা রিসোর্টে সময় কাটাতে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। এবং এসআই প্রায়ই ফোন করে তাকে অশোভন প্রস্তাব দিতো। তারা রুমানার নম্বরে এবং  হোয়াটস্‌অ্যাপ নম্বরে ফোন দিতো। তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় দুজনেই রুমানার ওপর ক্ষুব্ধ ছিল।

গত ২৬শে আগস্ট এক ঘটনাক্রমে রুমানার বোনের জামাইকে গ্রেপ্তার করতে যায় ওসি ছমির ও এস আই মোশাররফ।সেদিন রুমানা মামলার ওয়ারেন্ট চাওয়াতে এসআই মোশাররফ রুমানাকে টেনে হিঁচড়ে থানায় নিয়ে যায়।

পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে এসআই মোশাররফ পুলিশদের সহায়তায় টেনে হিঁচড়ে  রুমানাকে ওসির রুমে নিয়ে যায় এবং রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়। এ সময় ওসি তার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন এবং রুমানা চিৎকার করলে তাকে মেরে ফেলার ও রেপ করার হুমকি দেন।

এ সময় তিনি রুমানার মুখ চেপে ধরে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। তখন ওসিকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে তিনি তাকে চড়, থাপ্পড় এবং লাথি মারতে থাকে। সে  চিৎকার শুরু করলে এসআই মোশাররফ এসে তার গলা চেপে ধরে যাতে সে চিৎকার করতে না পারে।

এ সময় মোশাররফ তাকে যৌন নির্যাতন করার হুমকি দেয়। তখন ওসি ছমির বলে, ‘আমার কথাতো শুনলি না, এখন তোর রস বাহির করমু।’ পরে ২৭শে আগস্ট সকালে ওসি ও এসআই আবার তাকে প্রস্তাব দেয়- তাদের প্রস্তাবে রাজি হলে তাকে ছেড়ে দেবে। এতেও তিনি রাজি হননি।

পরে তারা রুমানার হাতের মোবাইল সেটটির লক খুলে সব তথ্য মুছে দেয়। যাতে পূর্বে তার সঙ্গে যোগাযোগের কোনো প্রমাণ না থাকে।  এবং তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ তুলে একটি মামলা করে কোর্টে চালান করে দেয়।

পরে ৮দিন জেলে থাকার পর তিনি জামিনে এসে মামলাটি করেন।  এ বিষয়ে রুমানা বলেন, তারা ভেবেছিল আমি প্রবাসীর স্ত্রী আমি তাদের প্রস্তাবে রাজি হবো। কিন্তু আমি রাজি হইনি। ওসি আমাকে রিসোর্টে যেতে বলেছিল। অথচ আমি সেদিনের আগে রিসোর্টই চিনতাম না। পরে আমি বললাম, আপনি যা বলার থানাতেই বলেন।

এতে তিনি বলেন, রিসোর্টে আমার সাথে ব্যক্তিগত কথা বলবেন। তিনি আমাকে রাতের বেলায় ফোন দিতেন। অন্য একটি মামলার কারণে আগে থেকে পরিচিত থাকায় তিনি আমার বাড়িতেও আসতে বলতেন কিন্তু আমি কোনেদিন রাজি হইনি। আর এসআই মোশাররফতো জোর করে আমার শরীরও ছুঁয়েছেন। আমি এসবের বিচার চাই।

বাংলা ম্যাগাজিন এস/কে