বাড়ি এক্সক্লুসিভ মিসরের রাজধানী কায়রোতে প্রথমবারের মতো ট্রেন চালকের আসনে নারী

মিসরের রাজধানী কায়রোতে প্রথমবারের মতো ট্রেন চালকের আসনে নারী

0
মিসরের রাজধানী কায়রোতে প্রথমবারের মতো ট্রেন চালকের আসনে নারী

মিসরের রাজধানী কায়রোতে প্রথমবারের মতো নারী চালকরা ট্রেন চালাচ্ছেন। ট্রেনের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই প্রশংসায় ভাসছেন তারা। এমনটাই বলছেন এই ট্রেনচালকরা।  তবে অনেক সময় অসমর্থনও পেয়েছেন।কায়রো মেট্রো এপ্রিল মাসে একদল মহিলা চালককে নিয়োগ দিয়েছিল। এ রকম ঘটনা মুসলিমপ্রধান আরবদেশের জন্য প্রথম।

সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত চালকদের একজন দুই সন্তানের মা হিন্দ ওমার। এই নারী ট্রেনচালক জানান, তিনি ট্রেনচালক হতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। ২০২০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটির মাত্র ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ নারী আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ করে থাকে। তাই তিনি পথিকৃৎ হতে এই পেশা বেছে নিয়েছেন।

৩০ বছর বয়সী ব্যবসায় স্নাতক ওমার ফ্লুরোসেন্ট জ্যাকেট পরিহিত অবস্থায় বলেন, ‘প্রতিদিন আমার হাতে হাজার হাজার মানুষের জীবন নির্ভর করে। ’এই পেশা নিয়ে পরিবারের অভিব্যক্তি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার মা-বাবা শুরুতে কাজটিকে অদ্ভুত ভাবলেও আমাকে সমর্থন করতেন। আমার স্বামীও খুবই উৎসাহী ছিলেন এই কাজ নিয়ে। শুরু থেকেই তিনি আমাকে উৎসাহ দিয়ে গেছেন। ’

মিসর মনে করছে, কায়রো মেট্রোর সম্প্রসারণে এই সিদ্ধান্ত উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। শহরটির ২০ মিলিয়ন বাসিন্দার মধ্যে পাঁচ মিলিয়ন বাসিন্দা প্রতিদিন এই মেট্রো ব্যবহার করে। বিগত বছরগুলোতে ভাড়া উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেলেও এখনো কর্মজীবী এবং মধ্যবিত্ত মানুষের পছন্দের তালিকায় রয়েছে এটি।

আরেকজন নারী চালক সুজান মোহাম্মদ (৩২)। প্ল্যাটফর্ম থেকে যাত্রীরা যখন চালকের আসনে প্রথম তাকে দেখেছিলেন তখনকার ঘটনা মনে করে সুজান বলেন, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যাত্রীরা খুব অবাক হয়েছেন। কারণ মিসরে অনেক পেশাতেই নারীরা কাজ করতে পারেন না।

সুজান বলেন, ‘অনেক যাত্রীই ভয় পেয়েছিল। তারা আমার দক্ষতা নিয়ে সন্দেহ করে বলেছিল, তারা একজন নারীর নিয়ন্ত্রণে যাত্রা করতে নিরাপদ বোধ করছে না। ’

জানা যায়, চালক হিসেবে নিয়োগ পেতে যাওয়া সব প্রার্থীকেই তাদের মনোযোগের গভীরতা এবং সহনশীলতার পরীক্ষা দিতে হয়েছে। নারী চালকদের রাতের বেলা কাজ করতে হয় না দেখে এই পেশায় তিনি বেশি আগ্রহ পেয়েছেন বলে জানান ওমার।

আরববিশ্বে সবচেয়ে পুরনো কায়রো মেট্রো ১৯৮৭ সালে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু নারী কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যান্য আরবদেশের তুলনায় তারা পিছিয়ে ছিল। ১৯৯৯ সালে মরক্কোর সাইদা আবাদ আফ্রিকা ও আরববিশ্বের প্রথম নারী ট্রেনচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন।উল্লেখ্য, সৌদি আরবে কিছুদিন আগেও নারীদের গাড়ি চালানো নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু বর্তমানে একদল নারী ট্রেন চালানোর প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।

বাংলা ম্যাগাজিন /এসকে