বন্ধুর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে তরুণীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী মোংলায় একটি গার্মেন্টে কাজ করে। গত ৮ই মে রাত সাড়ে ৮টায় বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার একটি পরিত্যক্ত মাদ্রাসায় এ গণধষর্ণের ঘটনা ঘটে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার ৫ ঘণ্টার মধ্যে রাত ১২টার পর রামপাল উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে র্যাব-৬ অভিযান চালিয়ে গণধর্ষণের মুলহোতাসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ওই তরুণী মোংলায় একটি গার্মেন্টসে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। গত ৮ই মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গার্মেন্টস থেকে বাড়ি ফেরার পথে ভাগায় তার বন্ধু হৃদয় (২০) এর সঙ্গে দেখা হয়। ভাগা হতে তার বন্ধু হৃদয়ের সঙ্গে চেয়ারম্যানের মোড় হেঁটে যাচ্ছিল।
সেই সময় বাগেরহাট জেলার রামপাল থানাধীন একটি পরিত্যক্ত মাদ্রাসা মাঠে দেয়ালের পাশে রাত সাড়ে ৮টার দিকে মো. আবুল কালাম আজাদ ওরফে শুকুর ও মো. আসলাম শেখসহ তাদের সহযোগী ৭-৮ জন আসামি ভিকটিমকে টেনে হিঁচড়ে একটি পরিত্যক্ত মাদ্রাসা মাঠে নিয়ে যায়।
তখন ভিকটিমের বন্ধু হৃদয়কে আসামিরা মারধর করে আটকে রাখে এবং আসামি মো. আবুল কালাম আজাদ ওরফে শুকুর ও মো. আসলাম শেখ ভিকটিমকে দেয়ালের আড়ালে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। তখন অন্য আসামিরা ভিকটিমকে একের পর এক ধর্ষণ করতে অপেক্ষা করতে থাকে ও পাহাড়া দেয়।
পরবর্তীতে ভিকটিম ডাক-চিৎকার করলে আসামিরা তাকে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে ভিকটিম ও তার বন্ধু বিষয়টি ভিকটিমের মাকে ফোন করে জানায়। ভিকটিমের মা তাৎক্ষণিক ঘটনাটি র্যাব-৬ এ অবহিত করে। এ ঘটনায় র্যাব-৬ রামপাল উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে উল্লেখিত আসামিদেরকে গ্রেপ্তার করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- রামপাল উপজেলার মালিডাঙ্গা গ্রামের আবুল হোসেন জমাদ্দারের ছেলে আবুল কালাম আজাদ ওরফে শুকুর (২৪), কিসমত ঝনঝনিয়া গ্রামের আব্বাস আলী শেখের ছেলে মো. আসলাম শেখ (২২), ঝনঝনিয়া গ্রামের মজিবর শেখের ছেলে মো. জনি শেখ (১৮), একই এলাকার হযরত আলীর ছেলে মো. মারুফ বিল্লাহ (২২), মালিডাঙ্গা গ্রামের মোজাহের শেখের ছেলে মো. হাসান শেখ (২০), একই গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে মো. রাসেল শেখ (২২), ঝনঝনিয়া গ্রামের আজিবর গাজীর ছেলে মো. হোসেন গাজী (১৮), ইয়াকুব আলীর ছেলে মো. রাজু শেখ (২৪)।
র্যাব-৬ এর পরিচালক লে. কর্নেল মুহাম্মদ মোসতাক আহমদ বলেন, অপরাধীচক্র, সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারী নির্মূলের জন্য আমরা কাজ করে চলছি। র্যাব সদর দপ্তরের নির্দেশে অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান অতীতে ছিল, বর্তমানে চলমান আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।
তিনি বলেন, যখন যে ধরনের অপরাধীরা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় র্যাব। সুন্দরবনে যখন জলদস্যু ছিল তখন র্যাব তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে। র্যাবের কাছে তারা আত্মসমর্পণ করেছে। এখন মাদক কারবারী, সন্ত্রাসী, অপরাধমূলক কাজ করে সমাজে শান্তি বিনষ্টকারী, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব-৬ এর পরিচালক লে. কর্নেল মুহাম্মদ মোসতাক আহমদ বলেন, কয়েক মাস ধরে খুলনার বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় চাঞ্চল্যকর ঘটনায় র্যাব-৬ এর অভিযানে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে অপরাধী চক্রগুলো।
মানবপাচার, ভুয়া চিকিৎসক, সুন্দরবনে বিষটোপ দিয়ে মাছ শিকারী, হরিণের চামড়াসহ চোরা শিকারী, ভুয়া চিকিৎসক, পর্নো ভিডিও সংরক্ষণ ও সরবরাহকারী, জাল এনআইডি কার্ড, জন্মসনদ ও বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদপত্র জালিয়াতিসহ মাদক কারবারীকে গ্রেপ্তার করছে। র্যাবের কঠোর অভিযান, অতি সক্রিয় গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক এবং কৌশলগত পদক্ষেপের কারণে গ্রেপ্তার হচ্ছেন অপরাধীরা।