ইউরোপএক্সক্লুসিভএভিয়েশনকূটনীতিবাংলাদেশ

দেশে এসে পৌঁছালো ইউক্রেনে রকেট হামলায় নিহত হাদিসুরের মরদেহ

দেশে এসে পৌঁছালো ইউক্রেনে রকেট হামলায় নিহত বাংলাদেশি জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধির থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ। সোমবার দুপুর ১২টা ৬ মিনিটে টার্কিশ এয়ারলাইনসের টিকে-০৭২২ ফ্লাইটযোগে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। 

মাতৃভূমির জন্য ত্যাগ স্বীকার করা হাদিসুরের মরদেহ রোববার দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় তার মরদেহ সোমবার দুপুরে ঢাকায় পৌঁছে। সব কিছু জেনেও দেশের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজের প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছেন। হাদিসুর রহমান আরিফের বাবা অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক বলেন, এখন আমরা ছেলের লাশ পাওয়ার আশায় বাড়ীতে অধীর অপেক্ষায় কাটাচ্ছি।

বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের ২৮ নাবিক দেশে ফেরার চার দিন পর আজ তার মরদেহ আসলো। গত ২রা মার্চ ইউক্রেনে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ২৫ মিনিট বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি’তে রকেট হামলা হয়। এতে জাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। হামলায় জাহাজের ব্রিজ ধ্বংস হয়ে যায়। নিহত হন ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান।

পরদিন ৩ মার্চ জাহাজটি থেকে জীবিত ২৮ নাবিক ও নিহত হাদিসুরের মরদেহ নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর ওই ২৮ নাবিককে ইউক্রেন থেকে মালদোভা হয়ে রোমানিয়ায় নিয়ে যায় সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাস।গত ৯ই মার্চ রোমানিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের তত্ত্বাবধানে ওই ২৮ নাবিককে দেশে ফেরত আনা হয়।

হাদিসুর বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের আবদুর রাজ্জাক হাওলাদার ও মা আমেনা বেগম দম্পতির ছেলে। এবার এসে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে শেষবারের মতো ছবি তুলে পিক দিয়েছিলেন হাদিসুর।

বরগুনা প্রতিনিধি জানান, বাড়ির সন্তান অবশেষে বাড়িতেই ফিরছে। তবে জীবিত নয়, কর্মশেষ না করতেই দায়িত্ব পালনের ৮ বছরের মাথায় ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর রকেট হামলায় প্রাণ হারানো প্রকৌশলী হাদিসুর রহমানের (২৯) নিথর দেহটা ফিরছে। তবুও পরিবার ও গ্রামবাসীর সান্ত্বনা।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বাড়ির পাশে পারিবারিক কবরস্থান যেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত তার দাদা আতাহার উদ্দীন হাওলাদার ও দাদী রোকেয়া বেগমকে তাঁর পাশেই এখন হাদিসুরকে সমাহিত করা হবে। সরেজমিনে দেখা যায়, ইতোমধ্যে সেখানে কবরের নমুনা করে রাখা হয়েছে। শেষ বারের মতো হাদিসুরকে লোকজন যাতে এক নজর দেখতে পারে সে জন্য কষ্ট লাঘবে বাড়ির উঠানে টাঙানো হয়েছে সামিয়ানা। প্রস্তুত রাখা হয়েছে চেয়ার।

Back to top button