বাড়ি কৃষি, প্রাণী ও পরিবেশ পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে ঘন কুয়াশায় ফেরি চলাচল বন্ধ

পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে ঘন কুয়াশায় ফেরি চলাচল বন্ধ

0
পাটুরিয়া দৌলতদিয়া রুটে ঘন কুয়াশায় ফেরি চলাচল বন্ধ

ঘন কুয়াশার কারণে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া নৌপথে গতকাল বুধবার মধ্য রাত থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে মাঝনদীতে আটকা পড়েছে একটি ফেরি। এ ছাড়া পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় আটকা পড়েছে দেড় শতাধিক যাত্রীবাহী বাস, দুই শতাধিক ব্যক্তিগত বিভিন্ন গাড়ি এবং চার শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক। দীর্ঘ সময় কনকনে শীতে কুয়াশার মধ্যে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন আটকে পড়া যাত্রী ও যানবাহনের শ্রমিকেরা।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা অফিস সূত্রে জানা যায়, বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে কুয়াশার ঘনত্ব বাড়তে থাকলে এই নৌ-রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এসময় পাটুরিয়া থেকে তিনটি ফেরি লোড নিয়ে দৌলতদিয়া যাওয়ার সময় মাঝ নদীতে আটকা পড়ে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আর দীর্ঘ সময় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ১৬টি ফেরির মধ্যে ১৪টি সচল রয়েছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বাকি দুটি ফেরি পাটুরিয়ায় ভাসমান কারখানায় মেরামত করতে দেওয়া হয়েছে। এ সময় যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা গোলাম মওলা নামের একটি রো রো ফেরি মাঝপদ্মায় নোঙর করতে বাধ্য হয়। এ দিকে পাটুরিয়া প্রান্তে আটটি ও দৌলতদিয়া প্রান্তে ছয়টি ফেরি অবস্থান করছে।

পারাপার বন্ধ থাকায় ঢাকা আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাস, ব্যক্তিগত বিভিন্ন গাড়ি ও পণ্যবাহী গাড়ি পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় আটকা পড়ে। এসব যাত্রীবাহী বাস পাটুরিয়া-উথলী সংযোগ সড়কে নদী পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। ব্যক্তিগত বিভিন্ন গাড়ি পাটুরিয়ার পাঁচ নম্বর ঘাট থেকে আরসিএল মোড় পর্যন্ত দীর্ঘ সারিতে আটকা পড়েছে। এ ছাড়া পণ্যবাহী গাড়িগুলো পাটুরিয়ায় টার্মিনাল, পাটুরিয়া-উথলী সড়ক ও উথলী মোড় এলাকায় সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসির আরিচা অফিসের ডিজিএম জিল্লুর রহমান জানান, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে কুয়াশার ঘনত্ব বাড়তে থাকলে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। কুয়াশা কেটে গেলে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হবে।

কুয়াশায় পারাপার বন্ধ থাকায় কনকনে শীতের মধ্যে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী ও চালকেরা। বিশেষ করে এই শীতে ঘাট এলাকায় খোলা জায়গায় দীর্ঘ সময় আটকে থেকে বৃদ্ধ, নারী ও শিশুদের দুর্ভোগ বেশি। এ ছাড়া শৌচাগার ও খাবার হোটেলের অপ্রতুলতা তাঁদের এই দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএর শিমুলিয়া বন্দর কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন জানান, ঘন কুয়াশার জন্য শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজার ও মাঝিরকান্দি নৌরুটে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচলও বন্ধ রয়েছে। সর্বশেষ সকাল ৮টা পর্যন্ত শিমুলিয়া ঘাট দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলমুখী ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রয়েছে।

যশোরের কেশবপুর উপজেলার আজাদুর রহমান ঢাকার মগবাজারে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি আজ ভোরে ঈগল পরিবহনের একটি বাসে স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে রওনা দেন। সকাল সাড়ে আটটা থেকে তিনি পরিবার নিয়ে ঘাটে নদী পারাপারের অপেক্ষায় আছেন। তিনি বলেন, ‘খোলা জায়গা, কনকনে শীত। ঝিরঝির বাতাসে শীত আরও বাড়িয়েছে। এরই মধ্যে শিশুসন্তানদের নিয়ে বাসের মধ্যেই চাদর মুরি দিয়ে বসে আছি।’

ঘাট এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক যুবায়েদ হোসেন বলেন, ফেরি বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় যানবাহনের চাপ বাড়ছে। আজ সকাল নয়টা পর্যন্ত পাটুরিয়া প্রান্তে দেড় শতাধিক যাত্রীবাহী বাস, দুই শতাধিক ব্যক্তিগত গাড়ি ও চার শতাধিক পণ্যবাহী গাড়ি আটকা পড়েছে। পারাপার বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় যানবাহনের চাপ আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।