বাড়ি অপরাধ ‘সিরিয়াল রেপিস্ট’ সাগর প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করত

‘সিরিয়াল রেপিস্ট’ সাগর প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করত

1
‘সিরিয়াল রেপিস্ট সাগর প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করত

কক্সবাজারে ‘আমারী রিসোর্ট’ নামের একটি আবাসিক হোটেলে এক তরুণীকে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত মো. সাগর মিজিকে (২৪) আটক করেছে র‌্যাব-১০। আজ শনিবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ি থানা এলাকার সায়েদাবাদ থেকে তাকে আটক করা হয়।

এ সময় সাগরের কাছে থেকে তিনটি মোবাইল ও নগদ ১৫ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। শনিবার দুপুরে কাওরানবাজার বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) মো. মাহফুজুর রহমান জানান।

স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করে ফাঁদে ফেলত সাগর মিজি নামে এক যুবক। পরে তাদের বিভিন্ন এলাকায় বেড়াতে নিয়ে যেত। সেখানে কৌশলে তাদের ধর্ষণ করা হতো। আর ধর্ষণে বাধা দিলে হত্যা করতেও পিছপা হতো না। এ কারণেই কক্সবাজারের কলাতলী এলাকার ‘আমারি রিসোর্টে’ এক তরুণীকে হত্যা করে সাগর। অবশেষে শনিবার র‌্যাব-১০ এর একটি দল রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। র‌্যাব বলছে, সাগর একজন ‘সিরিয়াল রেপিস্ট’ বা ক্রমিক ধর্ষক। অনেক নারীকে মিথ্যা প্রেমের ফাঁদে ফেলে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধ্য করেছে।

র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, সাগর গত ১৮ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের কলাতলী এলাকায় ‘আমারী রিসোর্টে’ একটি কক্ষ ভাড়া করেন। হোটেল কর্তৃপক্ষকে তিনি জানান, তার স্ত্রী ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে যাবেন, তখন তার ডাবল কক্ষ লাগবে। এরপর ২০ সেপ্টেম্বর সাগর ওই তরুণীকে স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলে নিয়ে যান।

পরদিন সকাল থেকে ৪০৮ নম্বর কক্ষে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে মিস্ত্রির সাহায্যে কক্ষটি খুলে ওই তরুণীর লাশ দেখতে পান হোটেল কর্তৃপক্ষ। এরপর পুলিশে খবর দিলে লাশ উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান বলেন, চতুর্থ শ্রেণি পাস সাগর নিজেকে মাস্টার্স ডিগ্রিধারী হিসেবে পরিচয় দিত। মেয়েদের ফাঁদে ফেলতে নিজেকে ব্যবসায়ী বা সরকারি কর্মকর্তা দাবি করত। ফেসবুকে তার তিনটি ভুয়া অ্যকাউন্ট রয়েছে। সেগুলোর মাধ্যমে মেয়েদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রেমের ফাঁদে ফেলত। অন্তত পাঁচজনকে ধর্ষণ করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর বাইরেও অনেকে তার নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। লোকলজ্জার ভয়ে কেউ মুখ খোলেননি।

গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে সাগর জানায়, পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে ওই তরুণীকে স্ত্রী পরিচয়ে রিসোর্টে নিয়ে যায়। সেখানে ধর্ষণের সময় ভুক্তভোগী বাধা দেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তরুণীর গলা চেপে ধরে দেওয়ালের সঙ্গে ধাক্কা দিলে তিনি মেঝেতে পড়ে যান। তখন আবারও তার গলা চেপে ধরে পাশে থাকা গ্লাস দিয়ে দুই-তিনবার মাথায় আঘাত করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

র‌্যাব জানায়, ঘটনাটি ছায়াতদন্তের সূত্র ধরে র‌্যাব-১০ এর একটি দল র‌্যাব সদর দপ্তরের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের সহায়তায় রাজধানীর সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড টোলপ্লাজা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার কাছ থেকে ভুক্তভোগীর মোবাইল ফোনসহ মোট তিনটি মোবাইল ফোন ও নগদ ১৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। তাকে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।কক্সবাজারে নিহত তরুণীর বাড়ি পার্বত্য অঞ্চলে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের এক কর্মকর্তা।