প্রাকৃতিক দুর্যোগবাংলাদেশ

ঢাকাসহ সারাদেশে বড় ভূমিকম্প: ভূমিকম্পে যা করণীয়

রাজধানী ঢাকায় বড় মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। শনিবার সকাল ৯টা ৩৫ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডে (বি.এস.টি) দিকে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোন ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবরও পাওয়া যায়নি। এর গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার।

এদিকে রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, চুয়াডাঙ্গা, নোয়াখালী, কুষ্টিয়া থেকেও ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬।

ভূমিকম্পের সময় রাজধানীতে অনেকেই আতঙ্কে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মনে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা জানান, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫.৬। যার উৎপত্তিস্থল হতে দূরত্ব ৮৬ কিমি. (ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণাগার ও গবেষণা কেন্দ্র, ঢাকা হতে দক্ষিণ পূর্ব দিকে)। এটি মাঝারি শ্রেণীর ভূমিকম্প।

এবিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূ কম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫.৬। তাৎক্ষণিকভাবে এর উৎপত্তিস্থল লক্ষীপুরের রামগঞ্জ এবং কুমিল্লা অংশে বলে জানা গেছে।

জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্সেসও একই তথ্য দিয়েছে।

ভূমিকম্পে যা করণীয়

প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে খুবই বিধ্বংসী একটি হলো ভূমিকম্প। সাধারণত কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই ভূমিকম্প সংঘটিত হয়ে থাকে। তাই এর ক্ষয়-ক্ষতিও অনেক বেশি হয়ে থাকে। আমেরিকান ন্যাশনাল আর্থকোয়েক ইনফরমেশন সেন্টার প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ২০ হাজারেরও বেশি ভূমিকম্পের ঘটনা রেকর্ড করে। এসব ভূমিকম্পের ৯৯ শতাংশ এতটাই দুর্বল থাকে যে আমরা অনুভব করতে পারি না। বাকি ভূমিকম্পগুলো শক্তিশালী এবং প্রাণসংহারী হতে পারে।

গুগল নিউজে ফলো করুন আরটিভি অনলাইন
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ঘন ঘন ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ায় দেশজুড়ে এটি এখন ‘মোস্ট টকড’ টপিকে পরিণত হয়েছে। এটি একটু আলাদা করে স্পর্শ করেছে ঢাকাবাসীকে। না জানি কখন ভূমিকম্প হয়; আর এতে প্রাণসহ সর্বস্ব বিলীন হয়ে যায়। যেহেতু ভুমিকম্পের বিষয়ে আগে থেকে কোনো পূর্বাভাস পাওয়া যায় না, তাই এ নিয়ে সতর্ক থাকায় শ্রেয়। ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কিত না হয়ে যতোটা সম্ভব মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে। অনেক সময় অল্প মাত্রার ভূমিকম্পের কারণেও অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে।

চলুন জেনে নিই-ভূমিকম্পের সময় মাথা ঠাণ্ডা রেখে যে কাজগুলো করা উচিত-
ভূমিকম্পের সময় আপনি যদি ঘরের ভেতরে থাকেন, তাহলে ঘরের বিম বা কলামের গোড়ায় আশ্রয় নিতে পারেন। এ সময় ঘরের কাচ, জানালা কিংবা দেয়ালের কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে। আর যদি বিছানায় থাকেন তাহলে সঙ্গে সঙ্গে বালিশ দিয়ে মাথা ঢেকে রাখুন।
ভূমিকম্পের সময় বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা ও অগ্নিকাণ্ড বেশি ঘটতে পারে। তাই এ সময় নিরাপদ আশ্রয়ে যাবার আগে ঘরের মেইন সুইচ ও গ্যাসের চুলা বন্ধ করে যেতে হবে।
যদি বহুতল বাড়ির ওপরের দিকের কোনো তলায় আটকা পড়েন এবং বেরিয়ে আসার কোনো পথই যদি না থাকে, তবে সাহস না হারিয়ে ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করুন উদ্ধারকারীর জন্য।
ভূমিকম্পের সময় আপনি যদি অফিসে থাকেন, তাহলে লিফট ব্যবহার না করে সিঁড়ি দিয়ে নামাই ভালো। আর এ সময় হুড়োহুড়ি না করে মাথা ঠাণ্ডা রেখে যতো দ্রুত সম্ভব নিরাপদ স্থানে চলে যেতে হবে।
ভূমিকম্পের সময় আপনি যদি হুইলচেয়ারে বসা থাকেন তাহলে চেয়ারটি লক করে রাখবেন এবং ঘাড় ও মাথায় যেনো কোনো ভারী জিনিস না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
ভূমিকম্পের সময় গাড়ি বড় বিল্ডিং, গাছ বা বৈদ্যুতিক খুঁটির কাছে পার্ক করবেন না। যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব গাড়ি থেকে নেমে বসে বা শুয়ে পড়ুন অথবা কোনো নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিন। এ সময় স্কুলে থাকলে ডেস্ক ও টেবিলের নিচে ঢুকে পড়তে হবে এবং তা শক্ত করে ধরে রাখতে হবে।
বড় ভূমিকম্পের পরপরই আরেকটা ছোট ভূমিকম্প হতে পারে, সেটাকে বলে আফটার শক। এ বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে। একবার বড় ভূমিকম্প হলে পরের কয়েক রাত একটু সতর্ক থাকতে হবে। এ সময় রাতে ঘুমানোর আগে মাথার কাছে একটা কাঁথা রাখতে হবে, যাতে সময়মতো সবচে’ জরুরি মাথাটাকে রক্ষা করা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button