বাড়ি অর্থ ও বাণিজ্য বেড়েছে আমদানি, কোনও পণ্যের সংকট হবে না, বাড়বে না দাম

বেড়েছে আমদানি, কোনও পণ্যের সংকট হবে না, বাড়বে না দাম

বেড়েছে আমদানি কোনও পণ্যের সংকট হবে না বাড়বে না দাম

আসন্ন রমজান মাস ঘিরে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের আমদানি বেড়েছে। বিশেষ করে ছোলা, খেজুর, মটর ডাল, মসুর ডাল, সয়াবিন তেল, সরিষার তেল, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, মসলা, তাজা ও শুকনো ফল আমদানি হয়েছে গত কয়েক মাসের তুলনায় অনেক বেশি।

আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা বলেছেন, রমজান ঘিরে যেসব পণ্য আমদানি হয়েছে এবং হচ্ছে তাতে কারসাজি না হলে কোনও ভোগ্যপণ্যের সংকট হবে না। এমনকি কোনও পণ্যের দামও বাড়বে না।

রমজান ঘিরে গত কয়েক মাসের চেয়ে ভোগ্যপণ্যের আমদানি বেড়েছে বলে জানালেন চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক ড. মোহাম্মদ শাহ আলম। তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে গত ১৫-২০ দিনে প্রচুর ভোগ্যপণ্য আমদানি হয়েছে। যা আগের যেকোনো মাসের তুলনায় অনেক বেশি। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এসব পণ্য জাহাজ থেকে ছাড় দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। বন্দর দিয়ে গত জানুয়ারি মাসে ৬৬ হাজার ৩০ টন ছোলা, আট হাজার ৮৭৩ টন মটর ডাল, ৪৯ হাজার ১৪২ টন মসুর ডাল, ৮১ হাজার ৮৯৯ টন সয়াবিন তেল, ৫৬৬ টন পেঁয়াজ, ১১ হাজার ২৪২ টন রসুন, আট হাজার ৮২ টন মসলা, ছয় হাজার ১৬৯ টন খেজুর, ২৬ হাজার ১২১ টন তাজা ফল এবং ৮৪৫ টন শুকনো ফল আমদানি হয়েছে।’

এর আগের মাসগুলোতে এত পরিমাণ পণ্য আমদানি হয়নি উল্লেখ করে শাহ আলম আরও বলেন, ‘গত ডিসেম্বরে ছয় হাজার ৬৪০ টন ছোলা, ৪৫ হাজার ২৬৭ টন মটর ডাল, ১৯ হাজার ৬১০ টন মসুর ডাল, ১০ হাজার ৮৯৬ টন সরিষার তেল, দুই লাখ ১১ হাজার ৭৪২ টন সয়াবিন তেল, ৮৮৮ টন পেঁয়াজ, তিন হাজার ৫৯৫ টন রসুন, ছয় হাজার ১৬ টন খেজুর, দুই হাজার ৮৫৩ টন মসলা, ২৪ হাজার ৬০ টন তাজা ফল ও এক হাজার ১০১ টন শুকনো ফল আমদানি হয়েছে।’

চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে চিনি আমদানি হয়েছে এক লাখ ১৮ হাজার ৭০৭ দশমিক ১৭ টন। যা আগের বছর একই সময়ে আমদানি হয়েছিল ৮০ হাজার ২১২ টন। রমজান ঘিরে বেশিরভাগ ভোগ্যপণ্যের আমদানি বেড়েছে।

আরও বেশি পণ্য আমদানি হবে জানিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ-কমিশনার মো. বদরুজ্জামান মুন্সী বলেন, ‘রমজান ঘিরে নিত্যপণ্যের আমদানি বেড়েছে। অনেক পণ্য জাহাজ থেকে খালাস সম্পন্ন হয়েছে। কিছু পণ্য আছে খালাসের অপেক্ষায়। সামনের দিনগুলোতে আরও বেশি পণ্য আমদানি হবে।’

পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, চাকতাই-খাতুনগঞ্জে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮৫-৯৫, দেশি মসুর ডাল ১২৫, ভারতীয় মসুর ডাল ৯৫, চিনি ১৩২-১৩৫, সয়াবিন তেল ১৬৫, পেঁয়াজ ৭০-৮০ ও রসুন ১৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। কোনও পণ্যের ঘাটতি নেই। কিছু পণ্যের দাম কমেছে। সামনে বাড়ার কোনও কারণ নেই।

কোনও পণ্যের দাম বাড়বে না জানিয়ে চাকতাই-খাতুনগঞ্জের আড়তদার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক সভাপতি সোলায়মান বাদশা বলেন, ‘রমজানে যেসব পণ্য প্রয়োজনীয়, বাজারে সেগুলো পর্যাপ্ত আছে। একইভাবে সরবরাহ ঠিক আছে। ফলে রমজানে নিত্যপণ্য সংকটের আশঙ্কা নেই। তবে গত বছরের তুলনায় এবার ছোলার দাম একটু বেশি। স্বাভাবিক আছে চাল-ডাল, তেল, আলু ও চিনিসহ সব পণ্যের দাম। ফলে কোনও পণ্যের দাম বাড়বে না বলে আশা করছি।’

নগরীর বহদ্দারহাট বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মানভেদে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১২০ টাকা। এছাড়া দেশি মসুর ডাল ১৩৫-১৪০, ভারতীয় মসুর ডাল ১১০, চিনি ১৪০, সয়াবিন তেল ১৬৮-১৭০, পেঁয়াজ ৯০-১০০, আলু ৩৫-৪০ ও রসুন ২৪০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

বাজারে ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ বেড়েছে উল্লেখ করে বহদ্দারহাট বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এখন কোনও পণ্যের সংকট নেই। দামও নাগালের মধ্যেই আছে। এভাবে থাকলে রমজানে কোনও সমস্যা হবে না। তবে পাইকারি ব্যবসায়ীরা মজুত কিংবা কৃত্রিম সংকট তৈরি করলে বাজারে অস্থিরতা দেখা দেবে। সেজন্য জেলা প্রশাসনকে সবসময় বাজার মনিটরিং করার অনুরোধ জানাই।’

Exit mobile version