বাড়ি অর্থ ও বাণিজ্য ব্যাংক খাতে বড় বিপর্যয়ের নেপথ্য কারণ

ব্যাংক খাতে বড় বিপর্যয়ের নেপথ্য কারণ

রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ব্যাংক দেয়ার পর থেকেই এই খাতের বড় বিপর্যয় শুরু হয়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ। এছাড়া পরিচালকদের অনৈতিক চর্চা, লুটেরাদের দৌরাত্ম্য এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার ব্যর্থতাও সমানভাবে দায়ী বলে মনে করেন তিনি। শনিবার (৩০ মার্চ) সকালে এক ছায়া সংসদের আলোচনায় সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, কেবল একীভূতকরণ নয়, সুশাসন ফেরাতে হলে হাত দিতে হবে সমস্যার মূলে।

অর্থনীতির আলোচনার পুরোটাই যেন এখন ব্যাংক খাত ঘিরে। সঙ্কট কাটাতে একের পর এক উদ্যোগ নেয়া হলেও তা বাস্তবায়নের আগেই হাজির হয় নতুন সমস্যা। ফলে একরকম অধরাই থেকে যাচ্ছে এই ব্যবস্থার কার্যকর উন্নয়ন। সম্প্রতি একীভূতকরণ নিয়েও শুরু হয়েছে নানামুখী সমালোচনা। যা জোরালোভাবে তুলে ধরলেন তরুণ বিতার্কিকরাও।

এক বিতার্কিক বলেন, এই নীতিমালা মূলধন বৃদ্ধি করবে। খেলাপি ঋণের হার কমাবে। সর্বোপরি, সুশাসন জোরদার করবে। আরেক বিতার্কিক বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে আমাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) গণনায় তা ৩ লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকা।

পক্ষে-বিপক্ষের মতামত শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ব্যাংক আসার পর থেকেই বড় বিপর্যয়ের শুরু। যা আরও ত্বরান্বিত হয়েছে পারিবারিক মালিকানা, লুটেরাদের দৌরাত্ম্য আর নিয়ন্ত্রক সংস্থার গাফিলতির কারণে। তিনি বলেন, ব্যাংকের পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা ও পর্যবেক্ষণ আলাদা। কিন্তু তিন স্তরেই ধস নেমেছে’।

এ সময় বক্তারা ব্যাংক খাতের সুশাসন ফেরাতে ব্যাংকের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা আলাদা করার সুপারিশ করেন।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ব্যাংকের মালিকানা পারিবারিক হয়ে গেছে। এই খাতের সুশাসনের অন্তরায় এটি। বাংলাদেশ ব্যাংক উল্টো রথে গেছে। আমার সময়ে পরিবার থেকে দুজন ছিলেন পরিচালক। পরে করা হয় ৪ জন। এখন করা হয়েছে ৩ জন। যাদের মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয়েছে নাকি ৯ বছর’।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘যারা ব্যাংক দুর্বল করেছে, একীভূতকরণের ফাঁকে যাতে তারা পালিয়ে যেতে না পারেন, সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। ওরা যাতে আরও অর্থপাচার না করতে পারে, সেজন্য তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় ব্যাংক আরও দুর্বল হতেই থাকবে। আর অন্য আলোচকরা বলেন, সুশাসন ফেরাতে কেবল একীভূতকরণ নয়, সংস্কার শুরু করতে হবে সমস্যার মূল থেকে’।

Exit mobile version