ইউরোপএক্সক্লুসিভবিশ্ব সংবাদব্রেকিং নিউজ

প্রাণভয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের পেছনে ছুটছেন ইউক্রেনের মানুষ

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে বৃহস্পতিবারের সকালটা অন্য দিনের মতো ছিল না। চোখেমুখে আতঙ্ক নিয়ে দিন শুরু হয় রাজধানীবাসীর। বিস্ফোরণ আর সাইরেনের শব্দে ঘুম ভেঙে যায় তাঁদের। এরপর শুরু হয় প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা। প্রাণভয়ে অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ের পেছনে ছুটেছেন, কেউবা পালিয়েছেন দেশ ছেড়ে।

আকস্মিক এ হামলায় অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। এর মধ্যে অনেককেই স্বাভাবিকভাবে কাজে যেতে দেখা গেছে। তাঁরা স্বাভাবিকভাবে অফিসগামী বাসে চড়ে বসেছেন। তবে অন্যদের মধ্যে ব্যস্ততার চিত্র চোখে পড়েছে। এ ছাড়া অনেকেই তাড়াহুড়া করে আশ্রয়ের খোঁজে মেট্রোস্টেশন এবং আশ্রয়শিবিরে ছুটেছেন। পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় ব্যাংক, সুপারমার্কেট এবং পেট্রলপাম্পগুলোতে মানুষের দীর্ঘ সারি দেখা যায়।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে বাঁচতে শহরের মেট্রোস্টেশন এবং আশ্রয়শিবিরে ছুটেছেন কেউ কেউ। আর বাকিরা পালানোর চেষ্টা করেছেন। দেশ ছেড়ে যাওয়ার জন্য মরিয়া মানুষের কারণে পোল্যান্ড সীমান্তগামী সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। রাশিয়ার হামলার পর কিয়েভের সড়কে দুই ধরনের দৃশ্য দেখা গেছে।

মেট্রোস্টেশনের পাশেই দুই বছর বয়সী সন্তানসহ এক দম্পতির সঙ্গে দেখা হয়। তাঁরা মুঠোফোনে হামলার খোঁজখবর নিচ্ছিলেন। তাঁদের খুবই আতঙ্কিত দেখাচ্ছিল। তাঁরা ইংরেজিও ভালোমতো বলতে পারেন না। তবে ন্যাটো কোথায়? এই প্রশ্ন করলেন তাঁরা।

কিয়েভের কেউ কেউ শহরের মেট্রোস্টেশন এবং আশ্রয়শিবিরের দিকে ছুটছেন, তখন অনেককেই শহর ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে। শহর ছেড়ে পোল্যান্ড সীমান্তের দিকে মানুষের কারণে প্রধান সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

পথেই সোভেতলানা নামের এক স্কুলকর্মীর সঙ্গে দেখা। তিনি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে বাঁচতে একটি আশ্রয়শিবিরের দিকে যাচ্ছিলেন। সকালে বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে যাওয়ার পর তিনি রাশিয়া অধিকৃত ক্রিমিয়া থেকে বন্ধুদের ফোন পান। এ সময় বন্ধুরা তাঁকে জানান, রাশিয়ান সাঁজোয়া যান ইউক্রেন সীমান্তে ঢুকছে।

বন্ধুদের ফোন পেয়ে সোভেতলানা ঝটপট একটি ব্যাগ গুছিয়ে আশ্রয়শিবিরের দিকে রওনা হন। মনোবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী সোভেতলানা বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি না এখন কী করব। নিরাপদে থাকা যায় এমন একটি জায়গায় আমরা যাচ্ছি।’ ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিওপোলে তাঁর মা-বাবা থাকেন। ইতিমধ্যে রাশিয়ান সেনারা সেখানে পৌঁছে গেছেন বলে জানতে পেরেছেন সোভেতলানা।

পেশায় বিক্রয় নির্বাহী মার্ক (২৭) নামের এক তরুণ বিবিসিকে বলেন, ‘এটা যুদ্ধ। সকাল সাতটার দিকে বিস্ফোরণ আর সাইরেনের শব্দে আমাদের ঘুম ভাঙে।’ রাশিয়াকে প্রতিরোধ করতে ইউক্রেনের ৯ লাখ মানুষ প্রস্তুত রয়েছে। মার্কও তাঁদের মধ্যে একজন।

তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আমি প্রস্তুত। এ ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই।’মার্ক বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই দেশকে রক্ষা করতে হবে। প্রয়োজনে যুদ্ধে মরতেও প্রস্তুত আমরা।’ তিনি বলেন, ইউক্রেনের প্রতিটি ইঞ্চি মাটি রক্ষার জন্য যুদ্ধ করবেন তিনি।অ্যালেক্স সিতেলেস্কির নামের একজন ইউক্রেনীয় মা-বাবাকে কিয়েভের বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। অপরদিকে বোনকে নিয়েও তাঁকে বেশ উদ্বিগ্ন দেখা গেল। তিনি বলেন, ‘আমি আমার বোনকেও কিয়েভ থেকে বের করে নিতে চাই।’

আরও দেখুন
Back to top button
এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে ‘হানি ট্র্যাপ’ শিলাস্তি রহমান ‘Pushpa 2’ is coming to Bangladesh in Hindi ইব্রাহিম রাইসি যেভাবে ৫০০০ মানুষকে হত্যা করেছিলো