বাড়ি অপরাধ বেশি বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে যৌনপল্লীতে বিক্রির সময় তরুণী উদ্ধার

বেশি বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে যৌনপল্লীতে বিক্রির সময় তরুণী উদ্ধার

2
বেশি বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে যৌনপল্লীতে বিক্রির সময় তরুণী উদ্ধার

বেশি বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লিতে বিক্রির সময় ১৯ বছর বয়সী এক তরুণীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিক্রি চেষ্টায় জড়িত এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দৌলতদিয়া যৌনপল্লির প্রধান ফটক থেকে ওই তরুণীকে উদ্ধার করা হয়। 

উদ্ধার হওয়া ওই তরুণী বলেন, তাঁর বাড়ি মাগুরা জেলায়। তাঁর নানা গরু কেনা-বেচার ব্যবসা করেন। ব্যবসার কারণে পলাতক মজিবর কসাই তাঁর নানা বাড়িতে যাতায়াত করতেন। সেখানে মজিবরের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। মাগুরায় মনিকা বিউটি পারলারে কাজ করতেন তিনি। মজিবর কসাই তাঁর কাছে তাঁর বেতন জানতে চান। মাসে ৭ হাজার টাকা বেতনের কথা জানানোর পর মজিবর কসাই তাঁর ভালো বেতনে চাকরির ব্যবস্থা করে দেবেন তাঁর নানাকে প্রস্তাব দেন। পরে এ কথায় তিনি ও তাঁর নানা রাজি হন। 

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম রফিক সরদার (৩৪)। তিনি উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের তাহের কাজীরপাড়া গ্রামের উম্বার সরদারের ছেলে। এ সময় এই কাজের প্রধান সহযোগী মজিবর কসাই (৫০) কৌশলে পালিয়ে যায়। মজিবর কসাই রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার নাদুরিয়া বাস্তপুর গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। 

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, ‘খবর পেয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থালে গিয়ে ওই তরুণীকে উদ্ধার ও একজনকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনায় জড়িত অপর আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। এ বিষয়ে উদ্ধার হওয়া তরুণী বাদী হয়ে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন।’ 

ঐ তরুণী আরও বলেন, গত রোববার তিনি তাঁর নানার সঙ্গে টাঙ্গাইল তাঁর খালার বাড়িতে রওনা হয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে পৌঁছান। এ সময় মজিবর কসাই তাঁদের রফিক সরদারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে জানান, রফিক তাঁর ভালো চাকরির ব্যবস্থা করে দেবেন। এরপর গতকাল রফিক সরদার তাঁদের ফোনে জানায়, ভালো চাকরির ব্যবস্থা হয়েছে, সেই সঙ্গে বাসাও ঠিক করা হয়েছে। তাঁরা যেন দ্রুত দৌলতদিয়ায় চলে আসেন। তাঁরা রফিকের কথায় বিশ্বাস করে সেদিনই বিকেল ৫টার দিকে দৌলতদিয়ায় চলে আসেন। 

দৌলতদিয়া রেলস্টেশন এলাকায় তাঁর নানা পাশে একটি দোকানে গেলে রফিক তাঁকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লির প্রধান গেটে নিয়ে যান। এ সময় তিনি তাঁর নানার জন্য অপেক্ষা করতে বললে রফিক তাঁকে বলেন, ‘তোমার নানা বাসা চেনেন, উনি চলে আসবেন। অসুবিধা নেই ওখানে তোমার মত আরও অনেক মেয়ে আছে।’ তাঁকে যৌনপল্লিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বুঝতে পেরে তিনি ভেতরে যেতে অস্বীকৃতি জানান। এ সময় তাঁকে জোরপূর্বক যৌনপল্লিতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তিনি চিৎকার করতে শুরু করেন। পরে স্থানীয়রাসহ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা মুক্তি মহিলা সমিতির কর্মীরা এগিয়ে এসে থানা-পুলিশকে খবর দেয়।