রাজপথে ছাত্রদের হাফ ভাড়া প্রচলনের দাবি সংসদে উঠেছে। সব ধরনের গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়া প্রচলনের দাবি জানিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেছেন, এ জন্য সংসদে নতুন আইন পাস করতে হবে। জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বেসরকারি গণপরিহনে এমন সিদ্ধান্ত জোর করে চাপিয়ে দিতে পারি না। তবে, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে সরকারি গণপরিবহনে হাফ ভাড়া চালু হয়েছে।
আজ শনিবার ‘মহাসড়ক বিল-২০২১’ পাসের প্রক্রিয়া অংশ নিয়ে তারা এ সব কথা বলেন। এ সময় বিরোধী দলের সদস্যদের বক্তব্যে জবাব দিতে গিয়ে হাফ ভাড়ার বিষয়ে সরকারের ইতিবাচক অবস্থান তুলে ধরেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।হাফ ভাড়া চালুর দাবি নিয়ে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগের জবাবে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ছাত্রলীগ বিবৃতি দিয়ে ছাত্রদের হাফ ভাড়ার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে। যেখানে সাংগঠনিকভাবে হাফ ভাড়ার পক্ষে সেখানে তারা হামলা কেন করতে যাবে? যিনি হামলার কথা বলেছেন তাকে বলবো তারা যে ছাত্রলীগ তার প্রমাণ করুন।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বিআরটিসি বাসে হাফ ভাড়া চালু করা হয়েছে। এটা পহেলা ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। এটা সারা দেশেই বিআরটিসি বাসের জন্য চালু হবে। তবে বেসরকারি যে গণপরিবহন রয়েছে। তাদের ওপর আমরা জোর করে চাপাতে পারি না। তারা তো সরকারের অধীনে না। বেসরকারি গণপরিবহনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত তাদের নেওয়া দরকার। সামাজিক দায়বদ্ধতা ও জনস্বার্থ বিবেচনায় তাদেরকে অনুরোধ করা হয়েছে, এমনকি প্রধানমন্ত্রী তরফ থেকেও অনুরোধ করা হয়েছে।
পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের চাপে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর সংশোধন করে শাস্তি কমানো হচ্ছে বলে অভিযোগের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক কিছু অ্যাডজাস্ট করতে হয়। এখানে অনেক সমস্যা আছে, যখন চেয়ারে বসবেন অনেক কিছু মোকাবিলা করতে হয়। এটা একটা চ্যালেঞ্জিং জব। এখানে আমরা কিছু কিছু বিষয় অ্যাডজাস্ট করি। কিন্তু সংসদে যেটা বলা হয়েছে তা মোটেও ঠিক নয়।
আপনি আইনটির সংশোধিত রূপটি এখনও দেখেননি। এটা সংসদে আসেনি। ওয়েবসাইটে আছে। আইন শাখা এটা ইতোমধ্যে ভেটিং করেছে। তারপরও আমাদের ওয়েবসাইটে রেখেছি। মতামত নিচ্ছি। তিনজন মন্ত্রীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তারা খুব সুন্দরভাবে দায়িত্ব পালন করেছে। স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সংশোধিত রূপ দাঁড় করিয়েছে। আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, এই আইনে সাজার শৈথিল্য বা কঠোরতা কোনোভাবেই শিথিল করা হয়নি। কোনো সাজা কমানো হয়নি।
সড়কে দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, সড়কের দুর্ঘটনা বন্ধ শুধু সরকারের কাজ নয়। সকলের সহযোগিতা দরকার। সাধারণরা আইন মানলেও আপনি ভিআইপি হয়ে রং সাইডে যেতে চান, সেখানে কী সড়কের শৃঙ্খলা থাকবে? মা শিশুকে কোলে নিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে আইল্যান্ড ক্রস করছে। মোবাইল ফোন কানে দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছে দুর্ঘটনা হবে না? এ জন্য কী শুধু চালকরা দায়ী? বেপরোয়া ড্রাইভিং অবশ্যই দায়ী, আমি সেটা অস্বীকার করছি না।
কিন্তু আমরা জনগণ যারা রাস্তা ব্যবহার করি তারা সচেতন নই। শুধু চালক নয় পথচারীরাও বেপরোয়া হয়ে যায়। তিনি বলেন, সড়ক নিরাপত্তার জন্য বিলটি আনা হয়েছে, রাস্তায় শৃঙ্খলার জন্য বিল আনা হয়েছে। ডিসিপ্লিন সড়কে দরকার, পরিবহনেও দরকার।