এক্সক্লুসিভকরোনা ভাইরাসবিশ্ব সংবাদব্রেকিং নিউজ

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন

আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল থেকে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ‘বি.১.১.৫২৯’ নাম দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এখন থেকে এই ধরনটিকে ‘ওমিক্রন’ নামে ডাকা হবে। বলা হচ্ছে, করোনার এই ধরনটি খুবই উদ্বেগের।এই ধরন কতটা প্রাণঘাতী ও সংক্রামক সেসব জানতে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। অথচ এর আগেই আফ্রিকার দেশগুলোর ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বসে আছে পশ্চিমা দেশগুলো।

বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯-এর এখন পর্যন্ত যতগুলো ধরন আছে তার মধ্যে ওমিক্রন সবচেয়ে জটিল। বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ ছড়ানো ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের মতোই।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাতে লিখেছে ওমিক্রনের অনেকবার মিউটেশন ঘটেছে। এই ভ্যারিয়েন্টে বারংবার আক্রান্ত হওয়ারও ঝুঁকি রয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞানীরাও এই ধরন নিয়ে উদ্বিগ্ন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে রূপান্তরিত হয়ে নতুন এই রূপটি পেয়েছে।যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এক বিজ্ঞানী করোনার নতুন এই ভেরিয়েন্টকে ‘ভয়ংকর’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। আরেক বিজ্ঞানী বলেছেন, এতটা ভয়ংকর ভেরিয়েন্ট তাঁরা দেখেননি।

নতুন ধরনটি সাউথ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয় বলে ২৪ নভেম্বর জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বতসোয়ানা, বেলজিয়াম, হংকং ও ইসরায়েলেও এই ধরন শনাক্তের তথ্য পাওয়া গেছে।ওমিক্রনের ভয়াবহতার শঙ্কায় আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশগুলোর সঙ্গে এরই মধ্যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে অনেক দেশ।

সাউথ আফ্রিকা, নামিবিয়া, জিম্বাবুয়ে, বতসোয়ানা, লেসেথোর মতো দেশগুলোর নাগরিকের ওপর ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। তবে যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডের নাগরিকদের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।আফ্রিকার এসব দেশের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো। এটা কার্যকর হবে সোমবার থেকে।

ওমিক্রন নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু এসব প্রশ্নের উত্তর খুব কমই জানা গেছে। এই ভেরিয়েন্ট প্রসঙ্গে আফ্রিকার সেন্টার ফর এপিডেমিক রেসপন্স অ্যান্ড ইনোভেশনের পরিচালক টুলিও ডি অলিভেরিয়া বলেন, অস্বাভাবিকভাবে এটি রূপান্তরিত হয়েছে এবং অন্য যেকোনো ভেরিয়েন্ট থেকে এটি আলাদা। তিনি বলেন, ‘এই ভেরিয়েন্টটি আমাদের হতবাক করেছে।’
ডি অলিভেরিয়া বলেন, সব মিলে ৫০ বারের মতো জিন বিন্যাস পরিবর্তিত হয়ে নতুন ওমিক্রন ধরন রূপ পেয়েছে। আর এর স্পাইক প্রোটিনের বৈশিষ্ট্য বদলেছে ৩০ বারের বেশি।

বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী নেচারে বলা হয়েছে, প্রথমে এই ভেরিয়েন্ট পাওয়া গিয়েছিল বতসোয়ানায়। এরপর সেটি দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হয়। এর পরপরই সেটি শনাক্ত হয়েছে হংকংয়ে। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকায় এই ভেরিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার পরই দেশটির পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছিল। তারা বলেছিল, এটি আরও ছড়াতে পারে।

এসব তথ্য পাওয়ার পর থেকে ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট নিয়ে কিছু প্রশ্ন সামনে এসেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, এই ভেরিয়েন্ট কত দ্রুত ছড়ায় এবং টিকা নেওয়ার ফলে শরীরে যে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা গড়ে ওঠে, তা কি এই ভেরিয়েন্টকে ঠেকাতে সক্ষম? এই ভেরিয়েন্ট সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে কী করতে হবে?

ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে। গবেষণাগার থেকে এর একটি পরিষ্কার চিত্র পাওয়া যাবে। কিন্তু যেসব প্রশ্ন উঠছে, তার সত্যিকারের উত্তর পাওয়া যাবে আসলে সংক্রমিত রোগীর পর্যবেক্ষণ করে।নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, এই ভেরিয়েন্ট নিয়ে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউসি। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে ভেরিয়েন্ট ছড়াবে না, এমনটা করা হয়তো সম্ভব।

তবে প্রশ্ন হলো, আমরা কি এই ভেরিয়েন্টে সংক্রমণ কমাতে পারব?’এই ভেরিয়েন্ট নিয়ে সিএনএনের সঙ্গে কথা বলেছেন ব্রাউন ইউনিভার্সিটির স্কুল অব পাবলিক হেলথের ডিন আশিষ ঝা বলেন, এই ভেরিয়েন্টটি ভিন্ন আচরণ করছে। মনে হচ্ছে, এটি ডেলটা ভেরিয়েন্টের চেয়ে বেশি সংক্রামক।

আরও দেখুন
Back to top button
Bangladeshi mountaineer Babar Ali climbs Mount Everest সাঁতারের নিষিদ্ধ পোশাকে নারীদের ফ্যাশন শো সৌদিতে অভিনেতা জয় ও মিষ্টি জান্নাতের চুমুর দৃশ্য কোথায়?