রূপচর্চা

স্ক্রাব ব্যবহারের নিয়মাবলী

্ত্বক ভালো রাখতে নানা আয়োজন করে থাকে অনেকেই। কিন্তু স্ক্রাব ব্যবহার না করলে পুরো আয়োজন থেকে যাবে অসম্পূর্ণ। কারণ, স্ক্রাব ত্বকের মৃত কোষ দূর করে, ত্বককে নিশ্বাস নিতে সাহায্য করে। পাশাপাশি রুক্ষ ত্বক কোমল করে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় তথা ত্বক পলিশ করার মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া ত্বকের উপরিভাগে থাকা হালকা দাগ ও ময়লা দূর করে। অনেকেই মনে করেন, ফেসওয়াশ, মাস্ক, টোনার, ময়েশ্চারাইজার, সেরাম ব্যবহার করলে স্ক্রাব ব্যবহার না করলেও চলবে।

খুব সাধারণভাবেই ঋতু বদলের সঙ্গে সঙ্গে সৌন্দর্যসামগ্রীও বদলাতে হয়। ফলে গরমের সময় ত্বকে যে প্রসাধনীর প্রয়োজন, শীতকালে সে ধরনের প্রসাধনী ত্বকের চাহিদা পূরণ না–ও করতে পারে। সে ক্ষেত্রে ত্বকের চাহিদা অপূর্ণ থেকে যাওয়াই স্বাভাবিক। তাই স্ক্রাবও বদলাতে হবে ঋতু অনুযায়ী। এ ছাড়া ত্বকের ধরনও বুঝতে হবে।

বাজারে যেসব স্ক্রাব পাওয়া যায়, তার অধিকাংশেই স্ক্রাবদানা হিসেবে ব্যবহৃত হয় মাইক্রোপ্লাস্টিক, যা ত্বকের জন্য খারাপ। আবার প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি স্ক্রাব ব্যবহারে এ সমস্যার সমাধান হবে এমন নয়। কারণ স্ক্রাবের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর বিডস বা দানা এবং এর আকার। বিডস যদি ধারালো হয় অথবা প্রতিটি দানার আকার সমান না হয়, সে ক্ষেত্রে তা ত্বকে ‘মাইক্রো টিয়ারস’ তৈরি করবে। এতে ত্বকের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ক্ষতির দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব হচ্ছে ত্বকের টেক্সচার পরিবর্তন। আবার ত্বক তাড়াতাড়ি বুড়িয়ে যেতে পারে। সুতরাং, স্ক্রাব কেনার সময়, তার উপাদানের পাশাপাশি বিডসের আকারসংক্রান্ত তথ্য সম্পর্কেও জানতে হবে।

অনেকেই মনে করে, স্ক্রাব মানেই বিডসযুক্ত প্রসাধনী। সব সময় বিষয়টি সঠিক নয়। বিডসবিহীন স্ক্রাবও রয়েছে। তবে সেগুলো অধিকাংশই প্রাকৃতিক। ত্বক সংবেদনশীল হলে পাকা পেঁপে বা টমেটোর রসও স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ত্বকের ধরন যদি শুষ্ক হয়, সে ক্ষেত্রে ঘন ঘন স্ক্রাবিং করা ঠিক নয়। স্ক্রাবের পরিবর্তে বেছে নেওয়া যেতে পারে পিল-অফ মাস্ক। এতে মাস্কের কাজও হবে, পাশাপাশি ত্বকের ওপরে থাকা মৃত কোষের স্তরও দূর হবে।

যাঁদের ত্বক সেনসিটিভ অথবা মিশ্র প্রকৃতির, তাঁদের ক্ষেত্রে সঠিক স্ক্রাব বেছে নেওয়া কঠিনই বটে। আবার বাজারে যেসব স্ক্রাব পাওয়া যায়, সেগুলো অনেকের ত্বকে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে রেডিমেড স্ক্রাবের পরিবর্তে বেছে নেওয়া যায় ঘরোয়া উপকরণ। ওটস, কফি, কমলালেবুর খোসাগুঁড়া, চালের গুঁড়া, সি-সল্ট, চিনি, বেসন ইত্যাদি স্ক্রাব হিসেবে বেশ কার্যকর। তবে সব উপকরণ সব ধরনের ত্বক এবং শরীরের সব অংশের জন্য উপযুক্ত নয়। মুখের ত্বকের জন্য ওটস, কফি, কমলালেবুর খোসা বা বেসন ভালো। শরীরের বাকি অংশের জন্য সি-সল্ট, চিনি, চালের গুঁড়া উপযোগী। হাঁটু, গোড়ালি, কনুই ইত্যাদি অংশের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে চিনি ও পাতিলেবুর রসের মিশ্রণ, ডালবাটা বা মেথিগুঁড়া।

স্ক্রাব ব্যবহারের নিয়মঃ  ফেসওয়াশের মতো প্রতিদিন স্ক্রাব ব্যবহার করা উচিত নয়। দুই সপ্তাহে এক বা দুবারের বেশি স্ক্রাবিং করা ঠিক হবে না। মুখের সঙ্গে গলা এবং ঘাড়েও স্ক্রাব করা ভালো।স্ক্রাব করার আগে মুখ পানিতে ভিজিয়ে নিতে হবে। এরপর কিছু পরিমাণ স্ক্রাব হাতে নিয়ে পুরো মুখে সার্কুলার মোশনে মুখের ত্বকে ঘষতে হবে। এবং অনেক জোরে ঘষা যাবে না। পাঁচ মিনিট স্ক্রাবিং করার পর ধুয়ে ফেলতে হবে।মনে রাখতে হবে, স্ক্রাব ব্যবহারের পর ত্বক অনেকটা শুকনো হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে টোনার এবং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
ওয়্যাক্সিং করার পর কয়েক দিন স্ক্রাবিং না করাই ভালো। এ জন্য ওয়্যাক্সিং করার আগে স্ক্রাবিং করে নিতে হবে।

মনে রাখতে হবে, প্রতিটি উপাদানই ভিন্ন ভিন্নভাবে কাজ করে এবং রূপচর্চায় এগুলোর গুরুত্ব সীমাহীন। তবে উপাদানগুলো ত্বকের কতটা উপকার করবে, তা নির্ভর করে কীভাবে তা ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমন ত্বকের ধরন অনুযায়ী স্ক্রাব বেছে নিতে হবে। সব ত্বকে একই স্ক্রাব উপযোগী নয়।

আরও দেখুন
Back to top button
‘Pushpa 2’ is coming to Bangladesh in Hindi ইব্রাহিম রাইসি যেভাবে ৫০০০ মানুষকে হত্যা করেছিলো Bangladeshi mountaineer Babar Ali climbs Mount Everest