বাড়ি রাজনীতি আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যার ত্রাণে খুশি

বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যার ত্রাণে খুশি

0
শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা

মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কোটালীপাড়ায় চার হাজার প্যাকেট খাদ্যসামগ্রী পাঠান দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। বুধবার সকালে কুশলায় বিতরণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তিন দিনব্যাপী এ কর্মসূচি। এই ধাপে উপজেলার একটি পৌরসভা এবং ১১টি ইউনিয়নের ১৯৭টি গ্রামের মানুষ পাচ্ছে এ সহায়তা।

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আছে বইলগা আমরা খাইয়া-পইরা বাঁইচা আছি। তিনি আমাগো জন্যে চাইল, ডাইল না পাডাইলে এই করোনার মধ্যে আমাগো না খাইয়া মরতে হইতো’। গতকাল বুধবার সকালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার কুশলা ইউনিয়নের পূর্বকান্দি মসজিদ মাঠে রোদে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন সত্তরোর্ধ্ব বিধবা মনোয়ারা বেগম। ষাটোর্ধ্ব মরিয়ম বেগম, বিধবা ফাতেমা বেগম এবং সত্তরোর্ধ্ব আইয়ুব আলীর কণ্ঠেও অভিন্ন সুর। ‘আল্লাহ যেন আমাগো শেখ হাসিনাকে অনেক দিন বাঁচাইয়া রাখে’—বলছিলেন একজন। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে পাঠানো খাদ্যসামগ্রী হাতে পেয়ে এমনই খুশি গোপালগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার মানুষ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা তাঁদের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে উপজেলার অসহায় ও দুস্থ মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য চাল, ডাল, লবণ, আলু, তেলসহ চার হাজার প্যাকেট খাদ্যসামগ্রী পাঠিয়েছেন। কুশলা ইউনিয়নে বিতরণের মধ্য দিয়ে এই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হলো। পর্যায়ক্রমে উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়ন ও পৌরসভায় এ খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হবে। এ ছাড়া আমরা আগামী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে দোয়া মাহফিল ও দুস্থদের মাঝে খাদ্য বিতরণের আয়োজন করেছি। এ আয়োজনের জন্য জননেন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করছেন।’

গতকাল প্রথম দিনে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা ছিলেন শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব। বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি কাজে পাশে থেকে তিনি শক্তি ও সাহস জুগিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু যখন জেলে ছিলেন তখন তিনি আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন; নানা ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন। আজকের এই দিনে আমরা শ্রদ্ধাভরে এই মহীয়সী নারীকে স্মরণ করছি।’

কুশলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম বাদল বলেন, ‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর আমাদের এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড থমকে যায়। জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর আমাদের এলাকায় রাস্তাঘাট ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হতে থাকে। ২০০১ সালে চারদলীয় সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমাদের এলাকার উন্নয়ন আবার থমকে যায়। সর্বশেষ ২০০৯ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর আমাদের এলাকার উন্নয়নের চাকা ঘুরতে থাকে। এখন এলাকার দরিদ্র্র্র মানুষ খেয়ে-পরে বেঁচে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না থাকলে এই জনপদের মানুষকে না খেয়ে মরতে হতো।’

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সারা দেশের মতো গোপালগঞ্জেও প্রধানমন্ত্রীর উপহারের খাদ্যসামগ্রী, নগদ অর্থসহ নানামুখী সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। গত অর্থবছরে জেলায় তিন লাখ ২৮ হাজার ৩৯৬ জন উপকারভোগীর জন্য বরাদ্দ ছিল নগদ ৯ কোটি ৩১ লাখ ৩১ হাজার ৮৫০ টাকা এবং এক হাজার ৩৩২ টন খাদ্যশস্য। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসের বরাদ্দ ছিল তুলনামূলক আরো বেশি। ২৮ হাজার ৯৮৪ পরিবারের জন্য দেওয়া হয় প্রায় ২৯০ টন খাদ্যশস্য এবং নগদ অর্থ ১০ লাখ টাকা। এ সহায়তার আওতায় আসে এক লাখ ২৩ হাজার ১৯৭ জন উপকারভোগী।

এখন প্রধানমন্ত্রীর উপহারের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে দেওয়া বিশেষ সহায়তায় কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়ায় হতদরিদ্রদের ঘরে ঘরে বইছে খুশির বান। ত্রাণ নিতে আসা নানা বয়সী মানুষের সঙ্গে আলাপ করে তাদের বিভিন্ন দুর্দশার কথা জানা যায়। পাশাপাশি দুর্দিনে সব সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাশে পাওয়ায় কৃতজ্ঞতাও স্বীকার করে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর গোপালগঞ্জে যেসব ত্রাণ বরাদ্দ করে, তা উপজেলা, ইউনিয়ন ও পৌরসভাভিত্তিক পরিমাণ নির্ধারণ করে দেয়। সে অনুযায়ী আমরা বণ্টন করে থাকি। এখানে কমবেশি করার কোনো সুযোগ নেই।’

জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে জেলায় যেসব সাহায্য-সহযোগিতা আসে, সেগুলো সঠিক ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বণ্টন হয়ে থাকে। এ পর্যন্ত যত ত্রাণ এসেছে, তা প্রশাসনের মাধ্যমে সমবণ্টন করা হয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর গোপালগঞ্জে যেসব ত্রাণ বরাদ্দ করে, তা উপজেলা, ইউনিয়ন ও পৌরসভাভিত্তিক পরিমাণ নির্ধারণ করে দেয়। সে অনুযায়ী আমরা বণ্টন করে থাকি। এখানে কমবেশি করার কোনো সুযোগ নেই।’

জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে জেলায় যেসব সাহায্য-সহযোগিতা আসে, সেগুলো সঠিক ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বণ্টন হয়ে থাকে। এ পর্যন্ত যত ত্রাণ এসেছে, তা প্রশাসনের মাধ্যমে সমবণ্টন করা হয়েছে।