রাজধানী

কারাবন্দী অবস্থায় লেখক মুশতাকের মৃত্যুর প্রতিবাদে শাহবাগ মোড় অবরোধ

তিনি ছয়বার জামিনের আবেদন করলেও তা নির্বিকারভাবে নাকচ করা হয়েছে

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দী অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। অবরোধকারীকারা মুশতাক আহমেদের মৃত্যুকে ‘রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে অভিহিত করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানাচ্ছেন। আজ শুক্রবার বেলা ১১টা ১০ মিনিটের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন বাম ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। মিছিলটি শাহবাগ ও পরীবাগ মোড় ঘুরে শাহবাগে এসে শেষ হয়। এখানে এসে তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।

বিক্ষোভে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (বাসদ) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন অভিযোগ েকরেন, গত বছরের এপ্রিলে লেখনীর মাধ্যমে দুর্নীতি-লুটপাটের প্রতিবাদ করেছিলেন লেখক মুশতাক। তার অপরাধ ছিল, তিনি সাধারণ মানুষের পক্ষে, অব্যবস্থাপনা-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কলম ধরেছিলেন। কারাগারে আটকে তাকে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। তিনি ছয়বার জামিনের আবেদন করলেও তা নির্বিকারভাবে নাকচ করা হয়েছে। মুশতাকের মৃত্যুকে তিনি নির্মম ‘রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে অভিহিত করেন।

তিনি দাবি করেন, দেশে আজ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে নির্মমভাবে দমন করা হচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো কালা কানুনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তারা। অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানান এ সময়।

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজন বলেন, ‘লেখক মুশতাক নয় মাস ধরে কারারুদ্ধ ছিলেন। মানুষের অধিকারকে অস্বীকার করার জায়গায় চলে গেছে বর্তমান সরকার।’

বিক্ষোভে আরও বক্তব্য দেন গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আরিফ মঈনুদ্দীন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের দপ্তর সম্পাদক রাজেন্দ্র চাকমা প্রমুখ।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান লেখক মুশতাক আহমেদ। তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে ছিলেন। কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, মুশতাক গতকাল সন্ধ্যার দিকে কারাগারের ভেতর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে প্রথমে কারা হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

গত বছরের মে মাসে লেখক মুশতাক আহমেদ, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নানকে র‍্যাব গ্রেপ্তার করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কথাবার্তা ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগে তারাসহ মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে র‍্যাব। সেই মামলায় দুজন জামিনে মুক্তি পেলেও মুশতাক ও কিশোরের জামিন আবেদন ছয়বার নাকচ হয়। আর বাকি আটজনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

আরও দেখুন
Back to top button
এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে ‘হানি ট্র্যাপ’ শিলাস্তি রহমান ‘Pushpa 2’ is coming to Bangladesh in Hindi ইব্রাহিম রাইসি যেভাবে ৫০০০ মানুষকে হত্যা করেছিলো