বাড়ি Bangla News দেশীয় অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণে পাশে থাকায় কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

দেশীয় অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণে পাশে থাকায় কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

4
দেশীয় অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণে পাশে থাকায় কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

দেশীয় অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণে পাশে থাকায় বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সব ষড়যন্ত্র-প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে। মানুষের শক্তিতে সব সময় বিশ্বাস করি। তাঁরা পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বলেই পদ্মা সেতু মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।

ব্যক্তি স্বার্থে বিশেষ এক ব্যক্তির উদ্যোগে ষড়যন্ত্র শুরু হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পরে আরও কয়েকজন যুক্ত হয়েছে। দুর্নাম রটানো হয়, দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়।ব্যাংকের একটি এমডি পদ একজনের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ হয় কী করে! ক্ষুদ্র ব্যক্তি স্বার্থের জন্য দেশের মানুষের কেউ ক্ষতি করতে পারে; এটা সত্যিই কল্পনার বাইরে ছিল।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আজ বুধবার এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ২০১১ সালে এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়ে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাইকা ও ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) সঙ্গে ঋণচুক্তি সই করা হয়। এরপর শুরু হয় ষড়যন্ত্র। সেই ষড়যন্ত্রের পেছনে কে বা কারা ছিল, তা বহুবার বলেছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই ষড়যন্ত্রকারীরা ছাড়াও বিশ্বব্যাংকের অভ্যন্তরে একটি গ্রুপ ছিল, যারা অন্যায্যভাবে কিছু কিছু বিষয়ে প্রভাব বিস্তার করতে চেয়েছিল। বিশ্বব্যাংক একটি প্রতিষ্ঠানকে যোগ্য করার লক্ষ্যে পরোক্ষ চাপ দিতে থাকে। রাজি হইনি। এরপর থেকেই তারা পদ্মা সেতুর কার্যক্রমে বাধা দিতে থাকে। দুদক তদন্ত করে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পায়নি। পরে কানাডার আদালতেও প্রমাণ হয়, পদ্মা সেতুতে কোনো দুর্নীতি হয়নি।

প্রধানমন্ত্রী জানান, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৭ সালে জাপান সফরে পদ্মা ও রূপসা নদীর ওপর সেতুর প্রস্তাব দিলে জাপান রাজি হয়। ২০০১ সালে পদ্মা সেতুর সমীক্ষার তথ্য আসে। ওই বছরের ৪ জুলাই ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়। ২০০১ এ বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে অগ্রাধিকার তালিকায় যুক্ত করে আওয়ামী লীগ সরকার।

ব্যয় বাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি জানান, ২০১০ সালের মধ্যে নকশা চূড়ান্ত হয়। পরের বছর জানুয়ারিতে সংশোধিত ডিপিপি দাঁড়ায় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। সেতুর দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার করার কারণে ব্যয় বাড়ে। এরপর ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ৩৭টি স্প্যানের নিচ দিয়ে নৌযান চলাচলের সুযোগ রাখা হয়েছে।

যুক্ত করা হয় রেল সংযোগ। কংক্রিটের বদলে ইস্পাত বা স্টিলের অবকাঠামো যুক্ত হয়। পাইলিংয়ের ক্ষেত্রেও গভীরতা বাড়ে। বাড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ব্যয়। ২০১৭ সাল থেকে সরকার জমি অধিগ্রহণে জমির দামের তিনগুণ অর্থ দেওয়া শুরু করে। ২০১৬ সালে সেতুর খরচ আবার বাড়ে। ওই সময় ডলারের বিপরীতে টাকার মান ৯ টাকা কমে যায়।

নদী শাসনে নতুন করে এক দশমিক তিন কিলোমিটার যুক্ত হয়। সব মিলে ৮ হাজার কোটি টাকা খরচ বেড়ে যায়। নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীকে যুক্ত করা হয়। সব মিলে পদ্মা সেতুর প্রকল্প ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। গত ২১ জুন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২৭ হাজার ৭৩২ কোটি ৮ লাখ টাকা।