বাড়ি অপরাধ চাকরিপ্রার্থী দুই তরুণীকে যৌনপল্লীতে বিক্রি

চাকরিপ্রার্থী দুই তরুণীকে যৌনপল্লীতে বিক্রি

ভালো বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ফরিদপুরের যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেওয়া দুই তরুণীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ পাচার চক্রের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে।

বুধবার (২৭ মার্চ) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার ওসি মো. হাসানুজ্জামান। গ্রেপ্তার পারুল বেগম ওরফে পারু (৪৮) আসাদ শেখের স্ত্রী ও রথখোলা যৌনপল্লীর বাসিন্দা।

পুলিশ সুত্রে জানা যায়, পার্লারে ভালো বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চাঁদপুরের কচুয়া থানার কড়ইশ এলাকা থেকে ওই তরুণীকে গত রোববার (১০ মার্চ) ঢাকায় নিয়ে আসেন আপন (৩০) নামে এক যুবক। এরপর দুদিন ঢাকায় রেখে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) তাকে তিনজন ব্যক্তির হাতে তুলে দেন। এরপর তারা ওইদিন সন্ধ্যায় ফরিদপুরে এনে রথখোলার পারুর কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন।

পর দিন একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে পারু তাকে জানান, এখন থেকে তিনি রথখোলা যৌনপল্লীর লাইসেন্সধারী সদস্য। এরপর পারু তার বাসায় রেখে শহরের গোয়ালচামট খোদাবক্স রোডের বাসিন্দা ইলিয়াস কসাইয়ের স্ত্রী যৌনকর্মী সর্দারনী ববি (৩৮) ও অন্যদের সহায়তায় তাকে জোরপূর্বক খরিদ্দারদের কাছে পাঠাতে থাকেন। মেয়েটি একজন খরিদ্দারকে তার ছোটবোনের মোবাইল নম্বর দেওয়ার পর ওই খরিদ্দার তার ছোটবোনকে ফোন করে মেয়েটিকে যৌনপল্লীতে আটকে রাখার বিষয়টি জানান।

মেয়েটির মা খবর পেয়ে তার এক ফুফাতো ভাইকে সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রথখোলা যৌনপল্লীতে এসে তার মেয়েকে দেখতে পান। এরপর কোতোয়ালি থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে।

এদিকে চাঁদপুরের মেয়েটিকে উদ্ধারের সময় চাকরির কথা বলে যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেওয়া ফেনীর পূর্ব ছাগলনাইয়ার আরেকটি মেয়ে পুলিশের কাছে সাহায্য চাইলে পুলিশ তাকেও উদ্ধার করে।

ফেনীর ওই মেয়েটি জানান, তাকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে জহির (৩০) নামে এক যুবক ফেনী থেকে এনে প্রথমে ঢাকার মিরপুর এলাকায় অজ্ঞাতনামা বাসায় এক রাত রাখেন। পরে তাকে রথখোলা যৌনপল্লীতে এনে পারুর কাছে বিক্রি করে অর্থের বিনিময়ে যৌন ব্যবসা করান।

কোতোয়ালি থানার ওসি হাসানুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় চাঁদপুরের ওই মেয়েটির মা রথখোলা যৌনপল্লীর পারুল বেগম ওরফে পারু, আপন, জহির ও ববিকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন।

তিনি বলেন, ওই এজাহারের ভিত্তিতে একটি মামলা রুজু করে এসআই ফাহিম ফয়সাল তরফদারকে মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়। এসআই ফাহিম ফয়সাল তরফদার অভিযান চালিয়ে রোববার (২৪ মার্চ) মামলার মূল আসামি পারুল বেগম ওরফে পারুকে গ্রেপ্তার করেন।

এ ঘটনায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা হয়েছে অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Exit mobile version