বিএনপির অভিযোগ, ৩ মাসে কারাগারে ১৩ নেতা ‘খুন’ হয়েছে

বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, কারাগারে নির্যাতনের শিকার হয়ে গত তিন মাসে দলটির ১৩ নেতার মৃত্যু হয়েছে। প্রত্যেকটি মৃত্যু ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’।

শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষে এই তথ্য জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘কারা হেফাজতে নির্মম নির্যাতনের শিকার বিএনপি’র নেতাকর্মীদের কারও না কারও মৃত্যুর সংবাদ আসছে প্রায়শ। কারা সেলগুলো একেকটি শ্বাসরুদ্ধকর কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে পরিণত করা হয়েছে। অতিমাত্রায় উৎসাহী কর্মকর্তারা গেস্টাপোদের মতো মূর্তিমান আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। প্রতিটি কারাগারের ভেতরে কারাবিধির সমস্ত সুযোগ—সুবিধা কেড়ে নিয়ে বন্দি নেতাকর্মীদের ওপর চালাচ্ছে বিভৎস নিপীড়ন।’

বিএনপির এই নেতার অভিযোগ, ‘খাওয়ার কষ্ট দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। ছাত্রলীগের সাবেক চিহ্নিত সন্ত্রাসী ক্যাডারদের কারা কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়ে শেখ হাসিনা কারাগারেও বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়ন চালাতে লেলিয়ে দিয়েছেন। তারা প্রতি মুহূর্তে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।’

বৃহস্পতিবার রংপুর কারাগারে বন্দি রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারি মহিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলামকে নির্যাতন করে বিনা চিকিৎসায় হত্যা করা হয়েছে দাবি করে রিজভী বলেন, ‘মনোয়ারুলের বাবা ফজলে রহমান, ছোট ভাই হারুনসহ স্বজনরা বলেছেন, ১৩ জানুয়ারি সুস্থ সবল মনোয়ারুলকে পুলিশ দিনের বেলায় বাসা থেকে তুলে থানায় নিয়ে যায়। এরপর সেইদিন আদালতে চালান না দিয়ে পরের দিন রাত পর্যন্ত থানায় আটকে রেখে বর্বরোচিত কায়দায় অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। তার সমস্ত শরীরে, পায়ে, পিঠে ও মাথায় আঘাতের গভীর চিহ্ন দেখা গেছে। পুলিশ নির্যাতন চালিয়ে মনোয়ারুলকে বিনা চিকিৎসায় হত্যা করেছে। মনোয়ারুলসহ কারা হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করছি।’

সরকারের সঙ্গে ‘আঁতাতের কারণে’ একই মামলায়—একই ধারায় জামিন মিলেছে শাহজাহান ওমরের, অথচ বিএনপির মহাসচিবসহ বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীর জামিন মিলছে না বলেও তিনি অভিযোগ করেন। বিএনপির অনুসারীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহার করে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানান রিজভী।

Exit mobile version