বাড়ি এক্সক্লুসিভ রাজশাহীতে বিএনপির গণসমাবেশস্থল হিসেবে মাদ্রাসা মাঠ ব্যবহারের অনুমতি

রাজশাহীতে বিএনপির গণসমাবেশস্থল হিসেবে মাদ্রাসা মাঠ ব্যবহারের অনুমতি

0
রাজশাহী নগরের মাদ্রাসা মাঠে হাজী মুহম্মদ মহসীন সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠ

রাজশাহীতে আগামী ৩ ডিসেম্বর বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ আয়োজনের জন্য ১ ডিসেম্বর থেকে নির্ধারিত মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। অবশ্য সমাবেশ ও মাইক ব্যবহারের জন্য রাজশাহী মহানগর পুলিশের অনুমতি এখনো মেলেনি। অনুমতির বিষয়ে পুলিশ কমিশনারের আশ্বাস পাওয়ার কথা জানিয়েছেন গণসমাবেশের সমন্বয়কারী ও বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল বলেন, বিএনপি ৩ ডিসেম্বর দুপুর থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মাঠ ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে। এখন তাঁরা বলছেন, আগে থেকে মাঠ দিতে হবে। এটা হতে পারে না। মাঠটি একটি বিদ্যালয়ের। সেখানে বার্ষিক পরীক্ষা চলছে। এই পরীক্ষা চলাকালে তাঁরা মাঠে এসে ঝামেলা করবেন—ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে তিনি এটা করতে দিতে পারেন না।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি বিএনপির পক্ষ থেকে রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশের জন্য মাঠ চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়। তারা রাজশাহী নগরের মাদ্রাসা মাঠে (হাজী মুহম্মদ মহসীন সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠ) সমাবেশের জন্য আবেদন করে।

দীর্ঘদিন পরেও অনুমতি না পাওয়া আজ সোমবার বিকেলে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের কথা শোনার পর জেলা প্রশাসক ১ ডিসেম্বর থেকে মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দেন।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, তাঁদের ঈদগাহ মাঠ নেওয়ার জন্য তিনি বলেছেন। সেখানে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। ওই মাঠ তাঁরা আগে থেকে নিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু তাঁরা বলছেন, মাদ্রাসা মাঠ নাকি ঐতিহাসিক মাঠ। তাঁরা সেই মাঠই চান। এখন অনুরোধের কারণে বিষয়টি বিবেচনা করা হয়েছে। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত পরীক্ষা রয়েছে। পরের দিন ১ ডিসেম্বর থেকে তাঁরা মাঠ ব্যবহার করতে পারবেন। এটা তিনি বলে দিয়েছেন।

রুহুল কুদ্দুস বলেন, ১ ডিসেম্বর থেকে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। তাঁদের নেতা-কর্মীরা ওই দিন তো আর যেতে পারবেন না। ধর্মঘটের আগে বগুড়া ও নওগাঁ থেকে তাঁদের ৪০ থেকে ৫০ হাজার নেতা-কর্মী রাজশাহীতে ঢুকবেন। তাঁদের মাঠেই থাকার ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু আগে থেকে মাঠ না পেলে তাঁরা এই নেতা-কর্মীদের কোথায় রাখবেন? তাঁদের চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হবে। এখন বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বের হয়ে বিএনপি নেতারা মহানগর পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখার করার চেষ্টা করেন। তিনি ব্যস্ত থাকার কারণে তাঁদের সময় দিতে পারেননি। তবে তাঁদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রুহুল কুদ্দুস তালুকদার। তিনি বলেন, পুলিশ কমিশনার তাঁদের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি ১ ডিসেম্বরের আগে থেকে মাঠ ব্যবহার করতে দেওয়া যায় কি না, সেই চেষ্টা করবেন।

আজ সকাল থেকেই মাদ্রাসা মাঠে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তারা ডেকোরেটরের লোকজনকে ফিরিয়ে দিচ্ছে। আজ বিএনপির পক্ষ থেকে দলীয় কার্যালয়ে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়েছে, তাদের মাঠে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। পুলিশ তালা দিয়ে রেখেছে।

আজ দুপুরে মাদ্রাসা মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের চারপাশে বাঁশ দিয়ে পর্দা টানানোর জন্য কাঠামো তৈরি করা হয়েছিল। তার কয়েকটি ভেঙে পড়েছে। একটি অটোরিকশায় ডেকোরেটরের লোকজন ফেস্টুন নিয়ে মাদ্রাসা মাঠে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু অনুমতি নেই বলে  পুলিশ তাঁদের ফিরিয়ে দেয়।

সে সময় মাঠে পুলিশের প্রায় ১০ সদস্য দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাঁদের একজন জানান, অনুমতি না দেওয়ার কারণে তাঁরা কাজ করতে দিতে পারছেন না। তাঁরা ওই মাঠে কী দায়িত্ব পালন করছেন, তা জানতে চাইলে ওই পুলিশ সদস্য বলেন, তাঁরা আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি দেখছেন, যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না হয়।