বাড়ি অর্থ ও বাণিজ্য বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার বৃদ্ধির পক্ষে নন অর্থমন্ত্রী

বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার বৃদ্ধির পক্ষে নন অর্থমন্ত্রী

0
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বাড়ানোর পক্ষে নন অর্থমন্ত্রী

আজ বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ভার্চ্যুয়ালি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ কঠিন। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আমাদের ফিসকাল ও মনিটরিং এই দুইটিকে অ্যাপ্লাই করে সেই কাজটি করি, বাংলাদেশ ব্যাংক সেই কাজটি করে।

মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকরা অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে প্রশ্ন রাখে, বিশ্বের সব দেশে ব্যাংক ঋণের সুদের হার বাড়ানো হচ্ছে, বাংলাদেশে তা বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের কোনো অগ্রগতি আছে কিনা।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন দেশে এখন সুদের হার বাড়ানো হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যাংক খাতে ঋণের সুদহার বৃদ্ধির পক্ষে নন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘আমাদের মতো দেশে সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন কাজ। ব্যাংক খাতে সুদের হার ৯ ও ৬ শতাংশ যেভাবে কার্যকর করেছি, তা ভালোভাবেই চলছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য রাজস্ব ও মুদ্রানীতি কাজে লাগানো হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক সেই কাজটি করে থাকে।’

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যে কমছে, তা কমতেই থাকবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। রপ্তানি বাড়ছে, আমদানি কমছে। পাশাপাশি প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) অনেক দ্রুত বাড়ছে। আমরা এক বছরে ২ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার (প্রবাসী আয়) অর্জন করেছিলাম, মাসে ২০০ কোটি ডলার করে। তা এখন মাসে ২০০ কোটি ডলারের ওপর চলে গেছে। প্রবাসী আয়ের মাধ্যমে যে পরিমাণ ডলার পাচ্ছি, ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার যে আগে অর্জন করেছিলাম, সেখানে যেতে বেশি দিন সময় লাগবে না।’

মুস্তফা কামাল বলেন, ‘উন্নত অর্থনীতির দেশগুলো যেভাবে মুদ্রাবাজার নিয়ে কাজ করে, সেভাবেই চিন্তা করব। তারা যেভাবে ঠিক করে দেয়, সেভাবেই ঠিক করে দেব এবং আমরা ধীরে ধীরে বাজারভিত্তিক লেনদেনে যাব।’

২০২০ সালের এপ্রিলে ব্যাংক খাতে সুদের হার ৯ ও ৬ শতাংশ কার্যকর করার পর আড়াই বছর ধরে তা-ই চলছে। গত মাসে হঠাৎ জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর মূল্যস্ফীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। তার পর থেকেই সুদের হার বাড়ানোর বিষয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়। সাধারণত ঋণের সুদের হার বাড়লে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি কমে এবং মানুষের হাতে টাকা কম থাকে। তখন ভোক্তাদের ভোগব্যয় কমে যায়। বিশ্বে এভাবেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উপায় হিসেবে সুদের হার বাড়ানো হয়।

ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) গত ২২ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকে গাড়ি ও বাড়ির ঋণে সুদের হার বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আবেদন করে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএ) একটি প্রতিনিধিদলও সম্প্রতি ঢাকা সফরকালে সুদের হার বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়ে গেছে।

এদিকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ৯ লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এর মধ্যে রপ্তানিকারক দেশ থেকে খাদ্য অধিদপ্তর সরাসরি ৪ লাখ টন আমদানি করবে। অধিদপ্তর বাকি ৫ লাখ টন চাল জরুরি ভিত্তিতে উন্মুক্ত আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে আমদানি করবে। এ জন্য দরপত্র দাখিলের সময়সীমা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশের তারিখ থেকে ১৫ দিন হবে। আগে সময়সীমা ছিল ৪২ দিন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল বারিক বলেন, কানাডা থেকে ৫০ হাজার টন এমওপি সার আমদানিতে ৩৮৬ কোটি টাকা এবং মরক্কো থেকে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানিতে ২৯৭ কোটি টাকা ব্যয় হবে।

বাংলা ম্যাগাজিন /এমএ