বাড়ি বাংলাদেশ গণ পরিবহণ সাদাপোশাকধারী পুলিশের বিরুদ্ধে চালক ও সুপারভাইজারকে মারধরের অভিযোগ

সাদাপোশাকধারী পুলিশের বিরুদ্ধে চালক ও সুপারভাইজারকে মারধরের অভিযোগ

0
সাদাপোশাকধারী পুলিশের বিরুদ্ধে চালক ও সুপারভাইজারকে মারধরের অভিযোগ

ফরিদপুরে সাদাপোশাকধারী পুলিশ সদস্যরা দুটি বাসের চালক ও একজন সুপারভাইজারকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে ফরিদপুরের নতুন পৌর বাসস্ট্যান্ডের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে আজ বিকেলে ফরিদপুর থেকে সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন বাসশ্রমিকেরা। এতে ঢাকাসহ ফরিদপুর থেকে বিভিন্ন পথে চলাচলকারী যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে বাসশ্রমিকেরা ফরিদপুর থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে শ্রমিকেরা নতুন বাসস্ট্যান্ডের সামনের সড়কে জড়ো হয়ে হামলাকারীদের শাস্তির দাবি জানান। এ সময় কিছু সময়ের জন্য ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে ১৫ মিনিট পর শ্রমিকেরা সড়কের পাশে গিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন।

বাসশ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বিকেল তিনটা পাঁচ মিনিটের দিকে টেকেরহাট ও বোয়ালমারী থেকে ফরিদপুরে আসা দুটি বাস টার্মিনালে ঢুকছিল। এ সময় বাস দুটি বাঁকা হয়ে থাকায় ও সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ইজিবাইকের কারণে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। এদিকে পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান একই সময় নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকা অতিক্রম করছিল।

টার্মিনালের সামনে যানজট সৃষ্টি হওয়ায় পুলিশের ওই গাড়ি থেকে সাদাপোশাকের তিন পুলিশ সদস্য সড়কে নামেন। এ সময় পুলিশ সদস্যরা প্রথমে বোয়ালমারী থেকে আসা বাসের জানালা দিয়ে চালক মো. আমির হোসেনকে (৫০) লাঠি দিয়ে আঘাত করেন।

পরে আমির হোসেন বাস থেকে নেমে এলে তাঁকে আবার লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। একই সময় সাদাপোশাকধারী ওই পুলিশ সদস্যরা টেকেরহাট থেকে আসা বাসের সুপারভাইজার মো. রেজাউল (৩০) ও চালক ঝন্টু খানকে (৪৫) চড়-থাপ্পড় ও ঘুষি মারেন।

ফরিদপুর মোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নাসির বলেন, খবর পেয়ে তিনি বাসস্ট্যান্ডে এসেছেন। শ্রমিকদের কাছ থেকে তিনি শুনেছেন, পুলিশের একটি গাড়ি থেকে নেমে সাদাপোশাকধারী তিন পুলিশ সদস্য বাসের দুই চালক ও এক সুপারভাইজারকে মারধর করেছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘শ্রমিকেরা কোনো অন্যায় করলে তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে, বিচার হতে পারে। কিন্তু শ্রমিকদের অমানবিকভাবে মারধর করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে শ্রমিকেরা বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। শ্রমিকদের দাবি হলো সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশের গাড়িটি শনাক্ত করতে হবে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত আমরা বাস চালানো থেকে বিরত থাকব।’

হঠাৎ শ্রমিকেরা বাস চলাচল বন্ধের ডাক দেওয়ায় সাধারণ যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। আজ সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ফরিদপুর নতুন বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকাসহ দূরদূরান্তের যাত্রীরা বিভিন্ন বাসের কাউন্টারের সামনে ভিড় করছে। তবে বাস বন্ধ থাকায় অনেকেই বাড়িতে ফিরে যাচ্ছে। এর মধ্যে কেউ অটোরিকশাসহ অন্যান্য ছোট বাহনে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

ফরিদপুরের কৈজুরি ইউনিয়নের বদরপুর এলাকার বাসিন্দা রূপা বেগম (৪০) ভাঙ্গায় যাবেন বলে বাসস্ট্যান্ডে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি, বাস চলছে না। এই সন্ধ্যাবেলা কীভাবে ভাঙ্গায় যাব, সেটাই ভাবছি।’

মধুখালীর রায়পুর ইউনিয়নের মাঝকান্দি এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী রঞ্জন দাস (৫০) বলেন, তিনি ব্যবসায়িক কাজে সদরপুরে যাবেন। তবে রায়পুর থেকে ফরিদপুরে এসে দেখেন, বাস চলাচল বন্ধ। এখন তিনি বিকল্প উপায়ে সদরপুরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুরের ট্রফিক পুলিশ পরিদর্শক তুহিন লস্কর বলেন, ‘আমি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করে দেখেছি, গাড়িটি পুলিশের ছিল, তবে তা রেজিস্ট্রেশনবিহীন। এটা জেলা পুলিশের গাড়ি নয়। তবে হাইওয়ে পুলিশ, পিবিআই বা অন্য কোনো পুলিশ বাহিনীর কি না, তা শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।’

বাংলা ম্যাগাজিন /এসকে