বাড়ি প্রবন্ধ/ নিবন্ধ অধিকার ও মর্যাদা সিলেটে পরিবহন শ্রমিকরা আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন

সিলেটে পরিবহন শ্রমিকরা আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন

সিলেটে পরিবহন শ্রমিকরা আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন

ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ এনে গতকাল সকালে সিলেট নগরীর উপশহর পয়েন্টে সড়ক অবরোধ করে পরিবহন শ্রমিকরা। এতে করে ওই এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরিবহন শ্রমিকরা জানিয়েছেন, ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা উপশহর পয়েন্টে কাগজপত্র তল্লাশির নামে হয়রানি করেন।

এতে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে ঊর্ধ্বতনদের হস্তক্ষেপে তারা অবরোধ তুলে নেন।

গতকালও সিলেটে ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা পুলিশি কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সড়ক অবরোধ করেছে।সিলেটে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা। উত্থাপন করেছে ৫ দফা দাবি। জানিয়েছে দাবি পূরণ না হলে তারা কঠোর আন্দোলনে যাবে। এবার তাদের ক্ষোভ বেশি পুলিশের বিরুদ্ধে। গতকালও সিলেটে ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা পুলিশি কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সড়ক অবরোধ করেছে।

সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি দিলু মিয়া জানিয়েছেন, সকালে কাঁচাবাজারে মালামাল আনলোড করে কয়েকটি ট্রাক বেরিয়ে যাচ্ছিল। এর মধ্যে তিন-চারটি গাড়িকে আটকে মামলা দেয় পুলিশ। এতে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ প্রশাসন ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের শান্ত করে। তাদের আশ্বাসে সাড়ে ১১টার দিকে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়। তিনি দাবি করেন, ট্রাফিক পুলিশের রেকার বাণিজ্যের কারণে চালকরা অতিষ্ঠ। সঙ্গে স্লিপ বাণিজ্যও রয়েছে। এতে করে চালকরা গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামতে ভয়ও পাচ্ছেন।

তবে পুলিশ বলছে, শৃঙ্খলা ফেরাতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটি চলমান থাকবে। পরিবহন শ্রমিকরা জানিয়েছেন, আগামী ৮ই সেপ্টেম্বর থেকে সিলেটে ৫ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করা হবে। গত শনিবার এ নিয়ে সিলেট জেলা সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি নং-চট্ট ৭০৭ এর প্রধান কার্যালয়ে ৫টি ট্রেড ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দদের বৈঠক হয়। আর এ বৈঠকে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ৫ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে।

দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-

১. সিলেটের ট্রাফিক পুলিশ কর্তৃক হয়রানি, রেকার বাণিজ্যসহ মাত্রাতিরিক্ত জরিমানা বন্ধ এবং সিলেট মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও ট্রাফিক ডিসিকে প্রত্যাহার করতে হবে। একইসঙ্গে ট্রাফিক অফিসে ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. দিলু মিয়াকে মানহানিকর ও অসম্মানজনক আচরণের জন্য লিখিত বিচার দিয়েও বিচার না পাওয়ায় সভায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

২. সিলেট শ্রম আদালতের প্রতিনিধি নাজমুল আলম রোমেনকে প্রত্যাহার করতে হবে। শ্রমিক লীগের নাম ব্যবহার করে শ্রম দপ্তরের প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে শ্রমিক ইউনিয়নগুলোকে হয়রানি থেকে মুক্তি করতে হবে।

৩. মহামান্য হাইকোর্ট সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশনার আলোকে পাথর কোয়ারি খুলে দিতে হবে।

৪. সিলেটের ভাঙা রাস্তাগুলোকে অবিলম্বে সংস্কার করে যান চলাচলের উপযোগী করে দিতে হবে। সিলেট-সুনামগঞ্জ, সুনামগঞ্জ বাইপাস রোড, কুমারগাঁও এলাকা, জকিগঞ্জ রোড, সিলেট কামালবাজার রোডসহ সকল রোড অবিলম্বে সংস্কার করতে হবে।

৫. সিলেটে নতুন সিএনজিচালিত অটোরিকশা বিক্রি বন্ধ করতে হবে। বিক্রয়কৃত গাড়িগুলোর রেজিস্ট্রেশন দিতে হবে। বেআইনি গাড়ি, অটোবাইক, বেটারিচালিত রিকশা ডাম্পিংকৃত গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে হবে।

দাবি উপস্থাপনের পাশাপাশি বৈঠকে আন্দোলন কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- দাবি পূরণ না হলে আগামী ৮ই সেপ্টেম্বর মনববন্ধন কর্মসূচি এবং সর্বস্তরের শ্রমিক নিয়ে ১৩ই সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট শুরু করা হবে।

তবে- সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) আশরাফউল্লাহ তাহের গতকাল বিকালে জানিয়েছেন, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ জনবান্ধব একটি বিভাগ। মোটরযান আইন ২০১৮-এর বিধি অনুযায়ী ট্রাফিক বিভাগ তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে।

যে আইনগুলোতে একটু জরিমানা কম কিংবা মানবিকতা দেখানোর সুযোগ আছে সেগুলো ট্রাফিক বিভাগের সবাই দেখাচ্ছেন। এরপরও যদি দুর্ব্যবহারের কোনো অভিযোগ থাকে সেটি লিখিতভাবে জানালে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ব্যক্তিগতভাবে কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

বাংলা ম্যাগাজিন / এমএ

Exit mobile version