বাড়ি অপরাধ ফেনসিডিল সেবনের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগের নেতার

ফেনসিডিল সেবনের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগের নেতার

0
নাটোর উপজেলার ম্যাপ

নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা রইস উদ্দিন ওরফে রুবেলের ফেনসিডিল সেবনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর থেকে এটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তবে ভিডিওটি কোথায়, কখন ধারণা করা হয়েছে এবং কে ফেসবুকে ছেড়েছে, আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত তা জানা যায়নি।

১ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ছাউনির নিচে রইস উদ্দিন ও ব্রহ্মপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহসিন আলী বসে আছেন। তাঁদের সামনে ফেনসিডিলের দুটি বোতল রাখা। কিছুক্ষণ পর একটি বোতলের ফেনসিডিল সেবন করেন রইস উদ্দিন। একপর্যায়ে তিনি বোতলটি মহসিন আলীর হাতে দেন। এরপর তাঁকে সেটি সেবন করতে দেখা যায়। পরে তাঁরা ধূমপান করেন।

ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে সমালোচনা হচ্ছে। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকে। ফেসবুকে ভিডিওটির নিচে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘এ–ই যদি হয় নেতার চরিত্র! অবিলম্বে মাদক সেবনকারী নেতাদের হাত থেকে নলডাঙ্গা উপজেলা মুক্ত করা হোক এবং তাঁদের গডফাদারদের চিহ্নিত করা হোক।’

রইস উদ্দিন নায়েক হিসেবে কুষ্টিয়া ক্যাম্পে থাকাকালে বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় আসামি হন। ওই মামলার তাঁর ছয় মাসের কারাদণ্ড হয়। কারাগার থেকে বেরিয়ে তিনি এলাকায় এসে স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের সঙ্গে বিভিন্ন মিছিল-সমাবেশে অংশ নিতে থাকেন।

২০১৯ সালের ৮ ডিসেম্বর নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে রইস উদ্দিনকে সভাপতি করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ আওয়ামী লীগের সভাপতি বরাবর কমিটি বাতিলের জন্য আবেদন করেন।

২০২০ সালের ১১ মার্চ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা হয়। সেখানে আগের কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।

রইস উদ্দিন নায়েক হিসেবে কুষ্টিয়া ক্যাম্পে থাকাকালে বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় আসামি হন। ওই মামলার তাঁর ছয় মাসের কারাদণ্ড হয়। কারাগার থেকে বেরিয়ে তিনি এলাকায় এসে স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের সঙ্গে বিভিন্ন মিছিল-সমাবেশে অংশ নিতে থাকেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রইস উদ্দিন বলেন, ‘আমি কোনো ধরনের মাদক সেবন করি না।সেদিন বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে একটু চেখে দেখেছিলাম। নিজেদের একজন লোক এর ছবি তুলেছিল। রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে সেটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম বলেন, রইস উদ্দিন বিডিআর বিদ্রোহের সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। নাটোরের এক আওয়ামী লীগ নেতা তাঁকে জেলা পরিষদের সদস্য ও নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বানিয়েছিলেন। দলীয় সভাপতি বিষয়টি জানার পর তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। বর্তমানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্যও নন রইস উদ্দিন।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি দেখেননি জানিয়ে নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম গতকাল রাতে বলেন, মাদকদ্রব্যসহ কাউকে গ্রেপ্তার করতে না পারলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া যায় না। মাদক সেবনের অভিযোগ পেলে এ ক্ষেত্রে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা খতিয়ে দেখা হবে।

বাংলা ম্যাগাজিন / এমএ