কিশোরগঞ্জের নিকলীতে গণধর্ষণের শিকার হয়ে এক গৃহবধূ (১৯) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। গত সোমবার রাতে গণধর্ষণের ঘটনার পর মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গৃহবধূর মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় গতকাল ভোরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে স্বামী লাল চাঁন মিয়া (৩১)সহ মোট ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার হওয়া অন্য ৩ জন হচ্ছে- রন্টু চৌকিদার (৪০), নাসিরুদ্দীন (৩৮) ও শরীফ মিয়া (৩২)। নিহত গৃহবধূ উপজেলার জারইতলা ইউনিয়নের হাফসরদিয়া গ্রামের লাল চাঁন মিয়ার স্ত্রী। তার বাবার বাড়ি রসুলপুর নয়াহাটি গ্রামে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, প্রায় ৯ মাস আগে হাফসরদিয়া গ্রামের মৃত রাজু মিয়ার ছেলে লাল চাঁন মিয়ার সঙ্গে পিতৃহীন মেয়েটির বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে লাল চাঁন মিয়া তার স্ত্রীকে দিয়ে পতিতাবৃত্তি করানোর চেষ্টায় লিপ্ত ছিল। কিন্তু নানা কৌশলে গৃহবধূ নিজেকে রক্ষা করে আসছিল।
এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর মামা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে স্বামী লাল চাঁন মিয়াসহ ৭ জনের নামোল্লেখ ও অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামি করে গতকাল নিকলী থানায় মামলা (নং-৯) করেছেন। তাদের মধ্যে পুলিশ স্বামী লাল চাঁন মিয়া, রন্টু চৌকিদার, নাসিরুদ্দীন ও শরীফ মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে।
এ ব্যাপারে নিকলী থানার ওসি মুহাম্মদ মনসুর আলী আরিফ জানান, গৃহবধূ মারা যাওয়ার আগে পুলিশের কাছে দেয়া জবানবন্দিতে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত পাঁচজনের নাম জানিয়েছে। তাদের মধ্যে রনি মিয়া ছাড়া বাকি ৪ জনকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে। রনি মিয়াসহ মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
সোমবার রাত ৮টার দিকে গৃহবধূ বাবার বাড়ি উত্তর রসুলপুর গ্রাম থেকে স্বামীর বাড়ি হাফসরদিয়া গ্রামে যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হয়। পথে শাহপুর রাস্তার মোড় থেকে তাকে তুলে নিয়ে পার্শ্ববর্তী পতিত জমিতে ৬-৭ জন মিলে রাতভর ধর্ষণ করে।
মঙ্গলবার সকালে বিবস্ত্র অবস্থায় গৃহবধূকে তারা রাস্তায় ফেলে যায়। স্থানীয়রা গৃহবধূকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে গৃহবধূর মৃত্যু হয়।