বাড়ি অপরাধ দুই বছর আগের ঘটনার প্রতিশোধে খুন করে লাশ গুম

দুই বছর আগের ঘটনার প্রতিশোধে খুন করে লাশ গুম

দুই বছর আগের ঘটনার প্রতিশোধে খুন করে লাশ গুম

চুয়াডাঙ্গায় ঈদের আগের রাতে আবদুল মোমিন তাঁর বন্ধুদের নিয়ে সাউন্ডবক্সে উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় প্রতিবেশী আবদুল বারেক কয়েকবার গান বন্ধ করতে বললেও মোমিন সেটা শোনেননি।

একপর্যায়ে বারেক সাউন্ডবক্সের টেবিলে লাথি মারলে টেবিলটি ভেঙে যায়। এতে মোমিন ও তাঁর বন্ধুদের আয়োজন পণ্ড হয়ে যায়। প্রায় দুই বছর আগের ওই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে বারেকের একমাত্র ছেলে আবু হোরায়রাকে (১১) খুন করে লাশ গুম করেন মোমিন।

মোমিন চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তালতলা গ্রামের গোরস্থানপাড়ার শহীদুল ইসলামের ছেলে। এদিকে আবু হোরায়রা চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তালতলা গোরস্থানপাড়ার কৃষক আবদুল বারেকের ছেলে ও শহরের ভি জে সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল।

গতকাল সোমবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গার আমলি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আবদুল মোমিন এসব তথ্য দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেন, গত ১৯ জানুয়ারি বিকেলে আবু হোরায়রাকে খরগোশ দেওয়ার কথা বলে মোমিন তাকে স্থানীয় একটি কবরস্থানে নিয়ে যান। এরপর শ্বাস রোধ করে হত্যার পর লাশ মাটিচাপা দিয়ে রাখেন।

এর আগে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আবদুল মোমিন জানিয়েছিলেন, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হোরায়রাকে খুনের পর আবদুল বারেকের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তাঁর কাছে চিরকুট পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, হোরায়রাকে জীবিত রাখা হয়েছে। বারেককে ১০ লাখ টাকা প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। বিষয়টি প্রশাসনকে জানালে ক্ষতি হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। পরে খুদে বার্তা পাঠিয়ে আবার ১০ লাখ টাকা দাবি করেন মোমিন। বারেক পাঁচ লাখ টাকা দিতে চাইলেও মোমিন তাতে রাজি হননি।

পরে বারেক পুলিশকে জানালে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু হয়। অবশেষ গত রোববার রাতে সদর থানা–পুলিশ মোমিনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রোববার রাত দেড়টার দিকে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় হোরায়রার লাশটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানায়, ১৯ জানুয়ারি পাশের বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে হোরায়রা নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পর থেকে সহপাঠী ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খোঁজ করে কোনো সন্ধান মেলেনি তার। পরে ২৬ জানুয়ারি আবু হোরায়রার বাবা সদর থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করলে পুলিশ হোরায়রার প্রাইভেট শিক্ষক মো. রঞ্জু ও তাঁর ভাই মো. মঞ্জুকে গ্রেপ্তার করে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, আদালতে জবানবন্দি নেওয়ার পর মোমিনকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার পেছনে আর কেউ জড়িত আছেন কি না, তা জানতে তৎপরতা চলছে।

Exit mobile version