বাড়ি এক্সক্লুসিভ হবিগঞ্জ হাসপাতাল থেকে একটি নবজাতক উধাও, পরে উদ্ধার

হবিগঞ্জ হাসপাতাল থেকে একটি নবজাতক উধাও, পরে উদ্ধার

হবিগঞ্জ হাসপাতাল থেকে একটি নবজাতক উধাও

হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল থেকে একটি নবজাতক উধাও নিয়ে দিনভর চলে তুলকালাম। উধাওয়ের ৬ ঘণ্টা পর সেই নবজাতককে হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডের এক নারীর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয় তার মায়ের কোলে। 

সোমবার রাতে প্রসব যন্ত্রণা উঠলে ফেরদৌস আরাকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার ভোরে সে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেয়। ঠান্ডাজনিত কারণে নবজাতকটিকে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় স্ক্যানো ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এ সময় নবজাতকের মা নিচ তলায় গাইনি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধিন ছিলেন। তবে স্ক্যানো ওয়ার্ডে বাহিরে বসা ছিলেন তার ফুফু ও নানু। সকাল ৯টার দিকে নবজাতকের ফুফু বাচ্চা আনতে স্ক্যানো ওয়ার্ডে গেলে দায়িত্বরত নার্স জানায় বাচ্চাকে তার বাবা নিয়ে গেছেন। অথচ ওই সময় নবজাতকের বাবা হাসপাতালেই ছিলেন না।

মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালের স্ক্যানো ওয়ার্ড থেকে হারিয়ে যায় শিশুটি। এ ঘটনায় নবজাতকের স্বজনরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন। তবে ঘটনাটি ইচ্ছাকৃত নাকি ভুলবশত হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। চুরি হওয়া নবজাতকটি জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার মড়রা গ্রামের দেলওয়ার হোসেন ও ফেরদৌস আরা দম্পতির দ্বিতীয় ছেলে সন্তান।

ঘটনার খবর পেয়ে নবজাতকের বাড়ি থেকে তার বাবা ও স্বজনরা হাসপাতালে আসেন। এ সময় হাসপাতালে উত্তেজনা দেখা দিলে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত এভাবেই চলে নানা নাটকিয়তা। অবশেষে সেই নবজাতকের সন্ধান মিলে গাইনি ওয়ার্ডের আকলিমা বেগম নামে এক নারীর কাছে।

হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের ত্বাবধায়ক ডা. আমিনুল হক সরকার বলেন, ‘মঙ্গলবার ৯টা ৫ মিনিটের দিকে আমাদের ওয়ার্ড থেকে একটা বাচ্চা উধাও হয়ে যায়। আমি দায়িত্বরত সিস্টারের সাথে কথা বলে জানতে পারি বাচ্চাটি কান্নাকাটি করছিল। এ সময় একজন ব্যক্তি বাচ্চার বাবা পরিচয় দিয়ে নিয়ে যান। পরে তারা দাবি করেন বাচ্চাটি তারা নেননি।’

তিনি বলেন, ‘এখান থেকে বাচ্চা উধাও হওয়ার কোনো কথা না। তবে আল্লাহর রহমতে বাচ্চাটিকে সুস্থ অবস্থাতেই পাওয়া গেছে। শুধুমাত্র ভুলবশত একটু উল্টাপাল্টা হয়ে গিয়েছিল। ভবিষ্যতে এ ধরণের ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হবে।’ডা. আমিনুল হক সরকার বলেন, ‘আজমিরীগঞ্জের নবজাতকটি বর্তমানে স্ক্যানো ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে।’

আজমিরীগঞ্জের শিবপাশা এলাকার মাসুম চৌধুরী ও আকলিমা বেগম দম্পতি সকালেই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। তাদের শিশুও ছিল স্ক্যানো ওয়ার্ডে। সকাল ৯টার দিকে মাসুম চৌধুরীর মা রাবেয়া খাতুন ওই নবজাতককে স্ক্যানো ওয়ার্ড থেকে নিয়ে আসেন। 

রাবেয়া খাতুন জানান, নার্স ভুলবশত তাদের কন্যা শিশুর বদলে ছেলে শিশুটিকে দিয়েছিল। কিছুক্ষণ পর তারা দেখতে পায় কন্যার শিশুর বদলে স্ক্যানো ওয়ার্ড থেকে তাদেরকে একটি ছেলে শিশু দেয়া হয়েছে। বিষয়টি তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানাতে চাইলেও ভয়ে জানায়নি। এক পর্যায়ে সুযোগ বুঝে তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানায়।

হবিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী বলেন, ‘সদর হাসপাতাল থেকে একটি নবজাতক উধাও হওয়ার খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে এসে তদন্ত শুরু করি। হাসপাতালের স্ক্যানো ওয়ার্ড বা এর আশপাশে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় বিষয়টি একটু জটিল হয়ে যায়। তবে খুশির খবর হচ্ছে বাচ্চাটিকে পাওয়া গেছে।’তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে শিশু নিখোঁজ ও উদ্ধার হওয়ার ঘটনাটি কিভাবে ঘটেছে। এটি ইচ্ছাকৃত নাকি ভুলবশত হয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

Exit mobile version