বাড়ি এক্সক্লুসিভ অমিক্রন মোকাবেলায় বিধি নিষেধ আসতে পারে

অমিক্রন মোকাবেলায় বিধি নিষেধ আসতে পারে

অমিক্রন মোকাবেলায় বিধি নিষেধ আসতে পারে

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে জনসাধারণের চলাফেরার ওপর নতুন করে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। মাস্ক ছাড়া কেউ গণপরিবহনে উঠতে পারবে না। শুধুমাত্র করোনার ভ্যাকসিন গ্রহণকারীরা অফিস-আদালত, রেস্টুরেন্ট, শপিং মলে প্রবেশ করতে পারবে। রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে লোক সমাগম সীমিত করা হবে। গণপরিবহনেও আসন সংখ্যা সীমিত করা হবে। খুব শিগগিরই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করবে।

সোমবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এসব তথ্য জানান।এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ, ভিড় কমানো, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ফ্লাইট বন্ধ করা, বাধ্যতামূলক মাস্ক পরা, সীমান্ত এলাকাগুলোতে স্ক্রিনিং জোরদারসহ বেশ কিছু বিধি-নিষেধ জারি করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে।

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন মোকাবেলায় করণীয় নির্ধারণে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠক শেষে ওমিক্রন মোকাবেলায় সরকারের প্রস্তুতি সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের হাসপাতাল প্রস্তুত আছে।সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা আছে। টিকা কার্যক্রম চালু আছে। আমাদের ২০ হাজার বেড সবই রেখে দিয়েছি। ডাক্তাররা প্রশিক্ষিত কিভাবে করোনার চিকিৎসা করতে হয়। দেশবাসীও এই বিষয়টি জানে।

আজ ১৮টি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বৈঠকে বসছেন। সবার মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হবে। বৈঠকের পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানাবেন।সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এরই মধ্যে ইউরোপের অনেক দেশ আফ্রিকার সব দেশের সঙ্গেই ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশও একই সিদ্ধান্ত নিতে পারে।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, করোনার দক্ষিণ আফ্রিকান ধরনটির বিস্তার ঠেকানোর অংশ হিসেবে সীমান্ত এলাকার বন্দরগুলোতে সতর্কতা ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

আশংকার কথা হচ্ছে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে। আজকেও ৩.৪ শতাংশ সংক্রমণ হার। মৃত্যুহার যদিও কম আছে। কিন্তু সংক্রমণ বাড়তে থাকলে মৃত্যুহার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। আমরা এটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাই। করোনা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে লকডাউনের চিন্তা আসবে। আবারও স্কুল কলেজ নিয়ে চিন্তা আসবে।

কী কী বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ আসতে পারে সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের পরিবহনের চিন্তা ভাবনা থাকবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সবকিছুর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আমরা এটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কিছু পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের ল্যান্ডপোর্ট, সিপোর্ট, এয়ারপোর্ট যেগুলো আছে স্ক্রিনিংয়ের সংখ্যা বাড়ানো এবং আরও মজবুত করা হবে। আমরা এন্টিজেন টেস্ট করছি, পিসিআর টেস্টও করছি এবং কোয়ারেন্টিনের জন্য আরও তাগিদ দেয়া হয়েছে। কেউ আক্রান্ত থাকলে তাদের যথাযথভাবে ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা।

এর আগে গত রবিবার কভিড-১৯-সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি বৈঠক করেছে। কমিটির সদস্যরা চারটি সুপারিশ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে- যেসব দেশে ওমিক্রন সংক্রমণ ছড়িয়েছে সেখান থেকে যাত্রী আসা বন্ধ করতে হবে। কোনো ব্যক্তির এসব দেশে ভ্রমণের সাম্প্রতিক (শেষ ১৪ দিন) ইতিহাস থাকলে তাকে বাংলাদেশে ১৪ দিন ইনস্টিটিউশনাল কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। করোনা শনাক্ত হলে আইসোলেশনে যেতে হবে। 

প্রতিটি বন্দর ও সীমান্তে স্ক্রিনিং পরীক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা সংক্রান্ত ব্যবস্থা আরো কঠোরভাবে পালন করা (স্কুল, কলেজসহ), চিকিৎসাব্যবস্থা শক্তিশালী করা, বিভিন্ন (রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয়) সমাবেশে জনসমাগম সীমিত করা এবং মানুষকে উৎসাহিত করতে করোনা পরীক্ষা বিনা মূল্যে করার সুপারিশ করা হয়।অন্যদিকে এই সংক্রমণ প্রতিরোধে ১৫ দফা পদক্ষেপ কঠোরভাবে বাস্তবায়নের কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

Exit mobile version