মাদ্রাসাছাত্রীকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ

প্রেমের অভিনয় করে এক মাদ্রাসাছাত্রীকে (১৫) ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে প্রেমিকের বিরুদ্ধে। প্রেমিক ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে তার বন্ধুকে দিলে তিনিও আপত্তিকর ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখান এবং কুপ্রস্তাব দেন। ফলে আবারও বন্ধুর কাছে বাধ্য হয়ে ধর্ষণের শিকার হয় ওই মাদ্রাসাছাত্রী।

এ ঘটনায় ছাত্রী ও তার মা-বাবা পুলিশের আশ্রয় নিলে অবশেষে পুলিশ কৌশলী হয়ে ওই প্রেমিকসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে।বুধবার রাতে কালারমারছড়ার অফিসপাড়া থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়ন এর অফিস পাড়া গ্রামে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- অফিসপাড়ার আলমগীর (২২) ও মো. আনোয়ার (২৬)।

পুলিশ জানায়, ঘটনার কয়েকদিন পর সেদিনের ভিডিও চিত্রটি আলমগীর তার কথিত বন্ধু মো. আনোয়ারকে দেখালে তিনি ওই ভিডিওটি নিজে সংরক্ষণ করে রাখেন। পরে আনোয়ারও ওই কিশোরীকে ভিডিও চিত্রের ভয় দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেন এবং প্রস্তাবে রাজি না হলে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এক পর্যায়ে লোকলজ্জার ভয়ে মেয়েটি রাজি হয়ে যায়। এরপর তারা আপত্তিকর ভিডিও চিত্রটিকে পুঁজি করে কিশোরীকে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন।

পুলিশ আরও জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মানসিক যন্ত্রণা ও শারীরিক চাপ সইতে না পেরে একপর্যায়ে মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে পুরো ঘটনাটি তার মাকে খুলে বলে। সর্বশেষ গত ২৬ অক্টোবর মহেশখালী থানায় মেয়েটির মা বাদী হয়ে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন সংশোধনী ও ২০১২ সালের পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে কথিত প্রেমিক আলমগীর ও তার বন্ধু আনোয়ারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ ওই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে কৌশলী হয়ে মাঠে নামে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হাই। ভুক্তভোগী ও তার অভিভাবকদের বরাত দিয়ে ওসি জানান, উপজেলার কালারমারছড়ার দরিদ্র পরিবারের ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরী মাদ্রাসাছাত্রীর সঙ্গে গত ছয় মাস আগে পার্শ্ববর্তী অফিসপাড়া গ্রামের মো. আলমগীরের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরই সুবাদে বেড়ানোর কথা বলে কথিত প্রেমিক আলমগীর ওই কিশোরীকে গত ১১ অক্টোবর পার্শ্ববর্তী চকরিয়া উপজেলার বদরখালীর বাজারের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যান। সেখানে আলমগীর তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হয়ে কিশোরীর অজান্তে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারন করে রাখেন।

এ বিষয়ে ওসি মো. আব্দুল হাই জানান, গুরুতর অপরাধটি গুরুত্বসহকারে আমলে নিয়ে মামলা দায়েরের পরদিনই পুলিশ অভিযান চালিয়ে আলমগীর ও আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। তাদের আদালতে মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

Exit mobile version