‘তাণ্ডবের ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত’ : সজীব ওয়াজেদ জয়

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমামনের দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বিক্ষত বাংলাদেশ।সম্প্রতি দূর্গা পূজায় কুমিল্লার একটি মণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরীফ রাখাকে কেন্দ্র করে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ঘর ও মন্দিরে হামলার ঘটনা নিয়ে এক তথ্য চিত্র তুলে ধরা হয় সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে।

ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি বলেন, গত ১৩ অক্টোবর স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ঘটানোর ষড়যন্ত্র হয় কুমিল্লায়।সেদিন সারাদিনে কুমিল্লার প্রায় ৭০টি পূজা-মণ্ডপে হামলা চালিয়ে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার সর্বোচ্চ অপচেষ্টা করে উগ্রবাদী গোষ্ঠীর সন্ত্রাসীরা।

ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে সরলপ্রাণ অনেক মানুষকেও বিভ্রান্ত করে খেপিয়ে তোলে তারা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে, ফেসবুক-ইউটিউবের মাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য ও গুজব ছড়াতে থাকে সারাদেশে।বুধবার রাতে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এসব কথা বলেন। 

বুধবার (২৭ অক্টোবর) রাত ১১ টার দিকে জয়ের পেইজে ৭ মিনিট ৪ সেকেন্ডের ঐ ভিডিওটি আপলোড করলে মুহূর্তে তা শতশত মানুষ শেয়ার করেন। প্রথম ৩ ঘন্টায় অর্ধলক্ষেরও বেশি মানুষ দেখেন তথ্য চিত্রটি। সেখানে বলা হয়, ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে সরলপ্রাণ অনেক মানুষকেই বিভ্রান্ত করে খেপিয়ে তোলা হয় সাম্প্রতিক এসব ঘটনায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে, ফেসবুক-ইউটিউবের মাধ্যমে উস্কানিমূলক বক্তব্য ও গুজব ছড়াতে থাকে সারাদেশে।

স্ট্যাটাসে জয় আরও লিখেছেন, বিএনপি নেতৃত্ব সারাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে না থেকে সরকারের বিরুদ্ধে তাদের প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে, যেখানে তাদের ভূমিকা হওয়ার কথা ছিল ভিন্ন। তাদের কাজকর্মে এটা স্পষ্ট যে কুমিল্লা থেকে শুরু থেকে সারাদেশে তাণ্ডবের এই ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত আর এ ঘটনাগুলোর মাস্টারমাইন্ড বিএনপির সিনিয়র নেতারা।

এরপর শুধু কুমিল্লাতেই এ হামলা থেমে থাকেনি। নোয়াখালী, চট্টগ্রমাম, বান্দরবান, ফেনী, কিশোরগঞ্জ ও রংপুরেও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। কোরআনের সম্মান রক্ষার ফাঁদ পেতে নির্বিচারে মানুষের উপর হমলা চালায় একদল সুযোগ সন্ধানী গোষ্ঠী। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দূর্গা ও লক্ষীপূজার উৎসবকে রক্তাক্ত করে তুলে তারা। 

তবে ১৩ অক্টোবর মণ্ডপে কোরআন রাখার যে নাটক মঞ্চস্থ হয়েছিল তার গোমর ইতোমধ্যে ফাঁস হয়ে গেছে। ভিডিওতে বলা হয়,  ইকবাল হোসেন নামে একজনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে আইনশৃংঙ্খলা বাহিনী। সহিংতার ঘটনায় ১০২ মামলায় প্রায় ৬০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভিডিও চিত্রে দাবি করা হয়, বিভিন্ন এলাকায় সিসিটিভির ফুটেজে হামলায় যারা নের্তৃত্ব দিয়েছে তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিজ এলাকায় এ কাজ করেনি। এমনকি পাশ্ববর্তী এলাকাতেও নয়। কেউ চিনতে পারবে না এমন এলাকাতে গিয়ে তারা নাশকতা চালিয়েছে। পূর্ব পরিকল্পনা না থাকলে এমন কাজ করা সম্ভব নয় বলেও জানানো হয়।

তিনি লেখেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল উদ্দেশ্যগুলোও ধীরে ধীরে মুছে দিয়েছে পাকিস্তানপন্থী রাজনৈতিক দল ও সরকারেরা। বাংলার শান্তিপ্রিয় মানুষের মাঝে ধর্মের মনগড়া ও ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে, স্বাধীনতার সত্য ইতিহাসকে ধামাচাপা দিয়ে একটি অসহিষ্ণু, বাংলাদশকে অন্ধকারাছন্ন দেশে পরিণত করার চেষ্টা করেছে তারা বারবার।

অমুসলিম জনগোষ্ঠীর বিপক্ষে সাধারণ মানুষকে উত্তেজিত করে ভাঙচুর ও তাণ্ডবের মাধ্যমে নিজেদের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য সব সময়ই সচেষ্ট বিএনপি-জামায়াতের মতো পাকিস্তানপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো। এবারের ঘটনাতেও ব্যতিক্রম নেই। তথ্যচিত্রে বলা হয়, নানুয়ার দিঘির সেই মণ্ডপ থেকে কুমিল্লার সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর বাসার দূরত্ব মাত্র তিনশ গজ।

ফেসবুকে দুষ্কৃতিকারীদের উষ্কানির ফাঁদে পা দিয়ে সকাল ৮টার মধ্যে মণ্ডপের আশপাশে হাজারো উত্তেজিত মানুষ এসে ভিড় জমায়। এ সময় মণ্ডপের পূজা উদযাপন কমিটির লোকজন মেয়র মনিরুল হককে ফোন দিলে তিনি ফোন ধরেননি। তিনি যখন ঘটনাস্থলে উপিস্থত হন, তখন বেলা ১০টা। জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন আমি ৮ টায় ঘুম থেকে উঠি, নাস্তা করে গোসল করে আসতে আমার দেরি হয়।

তথ্য চিত্রে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রামে জেমসেন হল পূজা মণ্ডপে হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্র্রেফতার ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই ডাকসুর সাবেব ভিপি নুরুল হক নুরের সংগঠনের নেতাকর্মী। এর আগেও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠান বানচালের উদ্দেশ্যে নুরের সংগঠনের কর্মীরা জামায়াতের সঙ্গে যোগ দিয়ে পুলিশের উপর হামলাসহ নানা নাশকতা করেছে।

তথ্যচিত্রের শেষে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল উদ্দেশ্যগুলো ধীরে ধীরে মুছে দিয়েছে পাকিস্তানপন্থি রাজনৈতিক দল ও সরকারেরা। বাংলার শান্তিপ্রিয় মানুষের মাঝে ধর্মের মনগড়া ও ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে, স্বাধীনতার সত্য ইতিহাসকে ধামাচাপা দিয়ে বাংলাদশেকে একটি অসহিষ্ণু, অন্ধকারাছন্ন দেশে পরিণত করার অপচেষ্টা হয়েছে বারবার। অমুসলিম জনগোষ্ঠীর বিপক্ষে সাধারণ মানুষকে উত্তেজিত করে ভাঙচুর ও তাণ্ডবের মাধ্যমে নিজেদের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য সব সময়ই সচেষ্ট বিএনপি-জামাতের মতো পাকিস্তানপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো। এবারের ঘটনায়ও তার ব্যতিক্রম নয় বলে আপলোড করা ভিডিওতে বলা হয়।

Exit mobile version