বাড়ি রাজনীতি অন্যান্য দল ‘জনতার অধিকার, আমাদের অঙ্গীকার’ স্লোগান নিয়ে নুরুর নতুন দল

‘জনতার অধিকার, আমাদের অঙ্গীকার’ স্লোগান নিয়ে নুরুর নতুন দল

1
‘জনতার অধিকার আমাদের অঙ্গীকার স্লোগান নিয়ে নুরুর নতুন দল

চলতি মাসেই নতুন রাজনৈতিক দল নিয়ে আসছেন ড. রেজা কিবরিয়া ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক। দলের সম্ভাব্য নাম ‘গণঅধিকার পরিষদ’ অথবা ‘বাংলাদেশ অধিকার পার্টি’। এটি হবে মধ্যপন্থি রাজনৈতিক দল।‘জনতার অধিকার, আমাদের অঙ্গীকার’ স্লোগান নিয়ে ২০ অথবা ২১ অক্টোবর দলটির ঘোষণা হতে পারে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন।

এ উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার চেষ্টা করছেন দলটির নেতারা। যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এখনো অনুমতি  মেলেনি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে না পারলেও যেকোনো অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন এই দলের নাম ঘোষণা করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।  

সর্বোচ্চ ২০০ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হবে। ড. রেজা কিবরিয়া আহ্বায়ক ও নুরুল হক সদস্য সচিব হচ্ছেন। দলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের ড. কামাল হোসেন, অধ্যাপক আসিফ নজরুলসহ বেশ কয়েকজন বিশিষ্টজন, শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ যাদের কোনো পদ-পদবি না থাকলেও শুভাকাঙ্ক্ষী হিসাবে পরামর্শ দেবেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি বড় সমাবেশের মাধ্যমে নতুন দল ঘোষণা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। অনুমতি না পেলে জাতীয় প্রেস ক্লাব বা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নতুন দলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে।

জানা যায়, নতুন রাজনৈতিক দলটির সঙ্গে একীভূত হতে পারে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা।ড. রেজা কিবরিয়া আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফের মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠান ছেড়ে রাজনীতিতে নেমেছেন পুরোদমে।এর আগে ৩ বছর দায়িত্বে ছিলেন ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে গণফোরাম থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।

ড. রেজা কিবরিয়া তার গুলশানের বাসায় নতুন রাজনৈতিক দল নিয়ে আলাপকালে জানান, এ পঞ্চাশ বছরে মোটামুটি সব দল এক সময় না এক সময় ক্ষমতার ভাগ পেয়েছে। আমরা নতুন দল। আমরা মনে করি এই পঞ্চাশ বছরে রাজনীতির পলিসিতে অনেক ভুল-ত্রুটি আছে। সেগুলো সংশোধন করার জন্য নতুন কিছু দরকার। পুরোনো যারা ভুল করেছে তাদের ওপর এখন ভরসা করা যাচ্ছে না।

যারা এখন কাজ করছে তারা সব শিক্ষিত ছেলেমেয়ে, সোশ্যাল মিডিয়া-ইন্টারেনেট যুগের মানুষ, তারা অনেক কিছু বুঝে। তাদের ভুল তথ্য দিয়ে ভোলানো যাবে না। তারা বুঝতে পারছে রাষ্ট্রে পুরো অবকাঠামোর মধ্যে অনেক ত্রুটি ছিল এগুলো ঠিক করতে হবে। সেগুলো করার জন্যই নতুন দল। তিনি বলেন, আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেব। প্রথম কথা হচ্ছে নির্বাচনটা সুষ্ঠু হতে হবে। আমরা আওয়ামী লীগের গত নির্বাচনের মতো প্রতারণার কোনো নির্বাচনে অংশ নেব না।

প্রায় বিভিন্ন ইস্যুতে মাঠে সরব রয়েছেন বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ। গত ১৭ই সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আংশিক কমিটি বর্ধিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ইউনিটের নেতাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণেও অংশ নেন তিনি। এবার এই রাজনৈতিক দলটির আহ্বায়ক হিসেবে শোনা যাচ্ছে তার নাম।  

অক্সফোর্ডে ডক্টরেট করা রেজা কিবরিয়া ২০১৮ সালে আইএমএফের গুরুত্বপূর্ণ চাকরি ছেড়ে ওয়াশিংটন থেকে দেশে ফেরেন। তার মূল পরিচয় অর্থনীতিবিদ হলেও গত জাতীয় নির্বাচনের তিনি গণফোরামে যোগদান করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করে আলোচনায় আসেন। পরে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নেন।

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক বলেন, আমরা ২০ ও ২১ অক্টোবর নতুন দল ঘোষণার চিন্তাভাবনা করছি। দুটি নাম ঠিক করা হয়েছে, একটি চূড়ান্ত করা হবে। গঠনতন্ত্র ওইভাবে এখন হবে না। একটা ঘোষণাপত্র থাকবে। যেখানে কেন স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে একটি রাজনৈতিক দল করার প্রয়োজনীতা বোধ করলাম, বর্তমান সংকটকে কেন্দ্র করে কিছু রাজনৈতিক কর্মসূচি, আহ্বায়ক কমিটি কিভাবে পরিচালনা করা হবে এসবের দিক-নির্দেশনা থাকবে। তিনি বলেন, দল গোছানোর পর আমাদের চিন্তা আছে জেলা কমিটিগুলো দেওয়া। নির্বাচন কমিশনের পদ্ধতি পূরণ করে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করব। সেটার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটি ও দলের ঘোষণা নিয়ে কাজ করছি। একইভাবে জেলা-উপজেলা কমিটির কাজ চলছে। আমাদের অনেক কাজ হয়েও আছে।

সূত্র জানায়, ছাত্র অধিকার পরিষদকে কেন্দ্রীভূত করে ইতোমধ্যে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশাজীবী নিয়ে পাঁচটি কমিটি করা হয়েছে। সেগুলো হলো-ছাত্র অধিকার পরিষদ, যুব অধিকার পরিষদ, শ্রমিক অধিকার পরিষদ, প্রবাসী অধিকার পরিষদ ও পেশাজীবী অধিকার পরিষদ। শিগগির নারী অধিকার পরিষদ নামে আরেকটি সংগঠন করা হবে। এ সংগঠনগুলোকে নতুন দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, দল ঘোষণার পর আহ্বায়ক কমিটির শীর্ষ নেতারা প্রথমেই সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরাণ (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করে দলীয় কর্মকাণ্ড শুরু করবেন। এছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মওলানা ভাসানী, জিয়াউর রহমান ও জেনারেল ওসমানীর মাজার জিয়ারত করবেন। পরে জেলা কমিটি ও অন্যান্য ইউনিট কমিটি গঠন করবে। পাশাপাশি সব জেলা সফর করার কথা রয়েছে।

More News