বাড়ি অর্থ ও বাণিজ্য সম্ভাবনাময় সেক্টরে মার্কিন বিনিয়োগ আহবান প্রধানমন্ত্রীর

সম্ভাবনাময় সেক্টরে মার্কিন বিনিয়োগ আহবান প্রধানমন্ত্রীর

1
সম্ভাবনাময় সেক্টরে মার্কিন বিনিয়োগ আহবান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতিশীল খাত যেমন- আইসিটি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, কৃষি-প্রক্রিয়াকরণ, নীল অর্থনীতি, পর্যটন ও হাইটেক পার্কের জন্য মার্কিন বিনিয়োগের আহবান জানিয়েছেন। 

বর্তমান বাসস্থান লোট নিউইয়র্ক প্যালেস থেকে ভার্চুয়ালি এক গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দিয়ে তিনি এই আহবান জানান। বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আইসিটি, নবায়নযোগ্য জালানি, জাহাজ নির্মাণ, অটোমোবাইল, হালকা প্রকৌশল, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, নীল অর্থনীতি, পর্যটন, জ্ঞানভিত্তিক হাই-টেক শিল্পসহ অন্যান্য লাভজনক খাতে মার্কিন বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, বর্তমান বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বাড়িয়ে আরও উচ্চ পরিসরে উন্নীত করতে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল অনুঘটকের ভূমিকা পালন করতে পারে। শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার এবং মার্কিন বাজারে অন্যান্য বাণিজ্যিক সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার হতে পারে বলেও প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।

ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানে ‘বাংলাদেশ ফরওয়ার্ড: দ্য ফ্রন্টিয়ার ফর গ্রোথ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল গোলটেবিল আয়োজন করে।প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সভাপতি নিশা বিসওয়াল, গোলটেবিল পরিচালনা করেন এবং উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন। ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সদস্য এবং যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দও এতে অংশ নেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ)’র বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত রয়েছে। বৈঠকে মূল-প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি সঠিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ)-র বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত রয়েছে। 

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্ব অভিন্ন মূল্যবোধ ও স্বার্থের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধিতে আমাদের এই পারস্পরিক সম্পর্কের প্রতিফলন ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী আশা করেন যে- যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশ ও অন্যান্য বাণিজ্যিক অগ্রাধিকারের মাধ্যমেই বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে। 

 তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র জ্বালানি, ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স খাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের কারণে অবশ্যই বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ বিনিয়োগকারী দেশ। উল্লেখকৃত খাত ছাড়াও অন্যান্য সম্ভাবনাময় খাতে এফডিআই সুবিধা দিতে বাংলাদেশ অবকাঠামো ও বিদ্যুৎ সরবরাহে উন্নয়ন ঘটাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০২৬ সালে এলডিসি অবস্থান থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের পর বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি ও রপ্তানি বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার প্রয়োজন হবে। ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সদস্যবৃন্দ এবং ইউএস অ্যান্ড বাংলাদেশ বিজনেস ওয়ার্ল্ডের নেতারা এই গোলটেবিলে অংশ নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী এই গুরুত্বপূর্ণ আয়োজনের জন্য ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল ও এর সভাপতি নিশা বিসওয়ালকে ধন্যবাদ জানান। 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা অব্যাহতভাবে আমাদের শারীরিক, আইনি ও আর্থিক অবকাঠামোর উন্নয়ন ঘটাচ্ছি এবং এ ছাড়াও পদ্মা সেতু ও ঢাকা মেট্রোরেলের মতো বিভিন্ন সড়ক ও রেল যোগাযোগও বৃদ্ধি করছি। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশেরই সবচেয়ে মুক্ত বিনিয়োগ-নীতি রয়েছে, যার ফলে বিদেশি বিনিয়োগ সুরক্ষিত থাকবে। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ পার্লামেন্টের আইন ও দ্বিপক্ষীয় চুক্তি দ্বারা সুরক্ষিত। 

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ পরবর্তী অর্থনৈতিক উত্তরণের ক্ষেত্রে সমৃদ্ধির লক্ষ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বিত প্রচেষ্টা জরুরি। আমাদের দুই দেশের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ সরকারের আন্তরিক সমর্থন রয়েছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য সুবিধাজনক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নীতি গ্রহণের জন্য বিজনেস কাউন্সিল মার্কিন সরকারকে রাজি করাবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপন করছে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’, একটি বঞ্চনা ও অর্থনৈতিক বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তার স্বপ্নপূরণ করাই আমাদের সরকারের লক্ষ্য। শেখ হাসিনা বলেন, বিগত এক দশক ধরে সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

এদিকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ থালেদ আল-হামাদ আল-সাবাহ ও সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন লোফভেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বৈঠক দুটি অনুষ্ঠিত হয়। বন্ধু রাষ্ট্র কুয়েতে প্রচুর বাংলাদেশি কাজ করে।