অপরাধময়মনসিংহ

স্ত্রীর অনৈতিক সম্পর্কের বলি

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে হযরত আলী (৩৩) নামের একজনকে খুনের রহস্য উন্মোচনের কথা বলেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি)। এ ঘটনায় হযরতের স্ত্রীসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে তারা। ডিবি বলেছে, ওই দুজনের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। এতে বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় হযরত আলীকে খুন করা হয়। ওই দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। 

ভায়রা লিয়াকত আলীর সঙ্গে হযরত আলীর স্ত্রী সাবিনা খাতুনের অনন্ত ১০ বছর ধরে অনৈতিক সম্পর্ক চলছিল। শ্যালিকা-দুলাভাইয়ের ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি জেনে যাওয়াই কাল হয় হযরতের। পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে হত্যার পর লাশ গুমের চেষ্টা করা হয়। 

গত ৩০ আগস্ট হালুয়াঘাটের কুতিকুড়া গ্রামের উলুয়ারকান্দা বিল থেকে হযরত আলীর লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার উত্তর বাঁশকান্দা গ্রামের বাসিন্দা। ৩১ আগস্ট তাঁর ছোট ভাই আবু নাসের অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হালুয়াঘাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।পুলিশ লাশ উদ্ধার করলেও ক্লু পাচ্ছিল না। তার মোবাইল ফোনটিও পাওয়া যাচ্ছিল না। নিহতের ভাই আবু নাসের এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার থানায় মামলা করলে তদন্তভার পায় ডিবি পুলিশ।

ওই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া দুজন হলেন নিহত হযরত আলীর স্ত্রী সাবিনা খাতুন (২৮) ও সাবিনার বোনের স্বামী হালুয়াঘাট উপজেলার গোরকপুর গ্রামের লিয়াকত আলী (৩৫)। বুধবার হালুয়াঘাটের গোরকপুর গ্রাম থেকে সাবিনা খাতুনকে ও উল্লারপাড় গ্রাম থোকে লিয়াকতকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

নিহতের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে মেলে হত্যার রহস্য। হযরতের স্ত্রী সাবিনা খাতুন ও তার দুলাভাই লিয়াকত আলীকে বৃহস্পতিবার ডিবি পুলিশ হেফাজতে নেয়। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করে তারা। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নয়ন মোদকের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় তারা।

জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, লিয়াকত রাজধানীর উত্তরা এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। ১০ বছর আগে সাবিনা তাঁর আগের স্বামীকে তালাক দিয়ে দুলাভাইয়ের কাছে চলে যান। সেখানে তিনি অন্যের বাসাবাড়িতে কাজ করতেন। লিয়াকতের সঙ্গে সাবিনার অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ কথা জানাজানি হলে লিয়াকতের সংসারে অশান্তি দেখা দেয়। দুই বছর আগে সাবিনা গোরকপুরে নিজ বাড়িতে চলে আসেন। আট মাস আগে সাবিনার সঙ্গে নালিতাবাড়ীর হযরত আলীর বিয়ে হয়। একপর্যায়ে লিয়াকতের সঙ্গে সাবিনার সম্পর্কের কথা হয়রত আলী জেনে যান। এ অবস্থায় তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন সাবিনা ও লিয়াকত।

সে অনুযায়ী ২৯ আগস্ট সাবিনা কৌশলে হযরত আলীকে গোরকপুর বাজারে লিয়াকতের কাছে পাঠান। লিয়াকত বেড়াতে যাওয়ার অজুহাতে তাঁকে হালুয়াঘাট উপজেলার কুতিকুড়া গ্রামে নিয়ে যান। সেখান থেকে উলুয়ারকান্দা বিলে নেওয়া হয়। সেখানে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে তাঁকে হত্যা করা হয়। পরে বিলের কাদার ভেতরে লাশ পুঁতে রাখা হয়।

ডিবি পুলিশের ওসি সফিকুল ইসলাম বলেন, সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ায় পরিকল্পিতভাবে হযরতকে হত্যা করা হয়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই রহস্য উন্মোচন ও আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুই আসামিই আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।

আরও দেখুন
Back to top button
Bangladeshi mountaineer Babar Ali climbs Mount Everest সাঁতারের নিষিদ্ধ পোশাকে নারীদের ফ্যাশন শো সৌদিতে অভিনেতা জয় ও মিষ্টি জান্নাতের চুমুর দৃশ্য কোথায়?