বাড়ি রাজশাহী রাজশাহী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে খিচুড়ি রান্না করে খেলো পুলিশ

সন্ত্রাসীদের সঙ্গে খিচুড়ি রান্না করে খেলো পুলিশ

সন্ত্রাসীদের সঙ্গে খিচুড়ি রান্না করে খেলো পুলিশ

রাজশাহীতে অবৈধভাবে গাছ কাটার ঘটনায় পুলিশের জরুরি কল সেন্টার ৯৯৯-এ একাধিকবার কল দিয়েও সেবা মেলেনি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপরন্তু, গাছ কাটা শেষে ওই বাগানে চারজন পুলিশ সদস্য গিয়ে সন্ত্রাসীদের সঙ্গেই খিচুড়ি রান্না করে খেয়ে ফিরে এসেছে। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাজশাহী প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী বাগান মালিক রিয়াজুল ইসলাম। তিনি নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানাধীন হড়গ্রাম নগরপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

সংবাদ সম্মেলনে রিয়াজুল ইসলাম জানান, তার বাবা আলহাজ আজিজুল হক ১৯৭৯ সালে নগরীর বড়পুকুরিয়া এলাকার মহির উদ্দীন সরকারের কাছ থেকে সাড়ে ৬১ শতক জমি কেনেন। জমিটি আমরা পাঁচ ভাই দীর্ঘ ৪১ বছর ভোগদখল করছি। সেখানে লিচু, আম ও মেহগনিসহ আরো বেশকিছু গাছ রয়েছে।

কিন্তু গত ১৬ই মার্চ সকাল সাড়ে ৭টার সময় নগরীর রানিদীঘি এলাকার মৃত জুব্বারের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক ও তার পার্টনার আব্দুস সোবহানসহ ৪০-৫০ জনের একটি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী চক্র আমাদের বাগানের গাছগুলো কাটতে থাকে। তৎক্ষণাৎ বিষয়টি কাশিয়াডাঙ্গা থানায় জানালে পুলিশ অপারগতা প্রকাশ করে।থানা পুলিশ অপারগতা প্রকাশ করলে ওইদিন সকাল ৮টা ৫২ মিনিটে আমার ছোট ভাই মো. ইসমাইল হোসেন পুলিশের জরুরি কল সেন্টার ৯৯৯-এ কল দিয়ে বিষয়টি জানায়।

ভুক্তভোগী বাগান মালিক মো. রিয়াজুল ইসলাম
ভুক্তভোগী বাগান মালিক মো. রিয়াজুল ইসলাম

সেখান থেকে এসএমএস-এর মাধ্যমে কাশিয়াডাঙ্গা থানার ডিউটি অফিসারের নম্বর দেয়া হয়। এরপর সেই নম্বরে কল দিয়ে জানানো হলে- ডিউটি অফিসারও অপারগতা প্রকাশ করে। এবার আমি নিজেই ৯৯৯-এ কল দিই এবং অবৈধভাবে গাছ কাটার ঘটনা ও থানা পুলিশের গড়িমসির বিষয়টি জানাই। ৯৯৯ থেকে বিষয়টি দেখছি বলে আমাকে আশ্বাস দেয়া হয়। রিয়াজুল ইসলামের অভিযোগ, দ্বিতীয়বার ৯৯৯-এ কল দিয়েও ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়নি।

ব্যবস্থা না নেয়ায় বাধ্য হয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে যান তিনি। তবে পুলিশ কমিশনারের কক্ষে ঢুকতেই কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি মাসুদ পারভেজের সঙ্গে দেখা হয়। রিয়াজুল বলেন, ওসি মাসুদ পারভেজ আমাদেরকে দেখে চমকে যান এবং পুলিশ কমিশনারের কক্ষে ঢুকতে না দিয়ে বিষয়টি দেখছি বলে আমাদের ফিরিয়ে দেন। এরই মধ্যে গাছ কাটা শেষ হয়ে যায়। কেটে নেয়া ২০টি গাছের আনুমানিক মূল্য পাঁচ লাখ টাকা।

অবৈধভাবে কাটা গাছ
অবৈধভাবে কাটা গাছ

তবে গাছ কাটা শেষ হলে ওইদিন দুপুর ১২টার দিকে চারজন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে যায়। তারা কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো সন্ত্রাসীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুপুরে ওই বাগানে খিচুড়ি রান্না করে খেয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ ঘটনায় গত ১৬ই মার্চ কাশিয়াডাঙ্গা থানায় আলাদা লিখিতভাবে একটি অভিযোগ দিলেও এখনো পর্যন্ত পুলিশ ঘটনাস্থলেই যায়নি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পরিবেশ অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী বাগান মালিক মো. রিয়াজুল ইসলাম।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি মাসুদ পারভেজ বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে তৎক্ষণাৎ পুলিশ পাঠানো হয়। এছাড়া পরবর্তীতে জিডির বিষয়টিও আইনগতভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই।’

Exit mobile version